May 9, 2024
জাতীয়

টঙ্গীতে কিশোর গ্যাং: বান্ধবীর সঙ্গে ছবি তুলে কিশোর খুন

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পর এবার গাজীপুরের টঙ্গীতে ভয়াবহ কিশোর গ্যাং কালচার সক্রিয় থাকার কথা জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। বান্ধবীর সঙ্গে ছবি তোলার জেরে দুই গ্যাং গ্র“পের দ্ব›েদ্ব এক কিশোর খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

গত ৭ জুলাই টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় শুভ আহমেদ (১৬) নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দিনগত রাতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজন কিশোরকে আটক করে র‌্যাব-১। আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টঙ্গীতে গ্যাং কালচারের চিত্র উঠে আসে। আটকরা হলেন- মৃদুল হাসান পাপ্পু ওরফে পাপ্পু খান (১৭), সাব্বির আহমেদ (১৬), রাব্বু হোসেন রিয়াদ (১৬) ও নূর মোহাম্মদ রনি (১৬)।

আটক সাব্বির হাজি সাইদ ল্যাব. স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এছাড়া ভিকটিম শুভ ও আটক বাকি তিনজন ফিউচার ম্যাপ স্কুলের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একই ক্লাসের শিক্ষার্থী ওয়া সত্তে¡ও শুভ ও আটক চারজন আলাদা দু’টি গ্যাং গ্র“পের সদস্য।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টঙ্গীতে বিভিন্ন গ্যাং গ্র“পের মধ্যে প্রায়ই দ্ব›দ্ব এবং ছোটখাট মারামারি হতো। তবে সেসব ঘটনায় কখনো মামলা হয়নি। শেষ পর্যন্ত গ্যাং গ্র“পের দ্ব›েদ্ব ছুরিকাঘাত করে শুভকে খুন করা হয়। শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি বলেন, ঘটনার আগের দিন ভিকটিম শুভ ও পাপ্পু, রাব্বু, রনি স্কুলের শিক্ষাসফরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় গ্রন্থাগার ও জাতীয় জাদুঘরে যায়। শিক্ষাসফর শেষে ফেরার পথে পাপ্পু ও তার বান্ধবী একই সিটে বসে। এসময় শুভ মোবাইলে তাদের ছবি তুলে অন্য সবাইকে দেখিয়ে ঠাট্টা করতে থাকে। ছবি তোলায় পাপ্পু ক্ষুব্ধ হয় এবং একপর্যায়ে শুভর সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়।

নিজের গ্র“পের সদস্যকে নিয়ে ঠাট্টা করার প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা করতে থাকে পাপ্পুর গ্র“পের সদস্যরা। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে কৌশলে শুভকে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়।

একপর্যায়ে সাব্বির ও রাব্বুর কাছে থাকা সুইচ গিয়ার ছুরি দিয়ে শুভর বুকে ও পিঠে উপর্যুপরি আঘাত করে। রনি সাব্বিরের কাছ থেকে ছুরি নিয়ে শুভর মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থেকে শুভর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

র‌্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, এসব গ্যাং কালচারগুলো সাধারণত এলাকায় নিজেদের প্রভাব জাহির করতে চায়। এর আগেও এসব গ্র“পের মধ্যে অনেকগুলো মারামারির ঘটনা ঘটেছে, তবে মামলা হয়নি। কিশোরদের মধ্যে খুন করার প্রবণতার কারণ সমাজের ক্ষয়িষ্ণুতা। এছাড়া, মাদকের একটা প্রভাব আছে বলে মনে করছেন তিনি। এসব গ্র“পে রাজনৈতিক কোনো প্রভাবের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, তাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্লেষণ করে ওই এলাকায় ৫-৬টি গ্র“প সক্রিয়ে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা এসব গ্যাং কালচার গ্র“পের মূলে যাবো। আমি আশ্বস্ত করে বলতে চাই, আগামী ৫-১০ বছর পর্যন্ত ওই এলাকায় আর গ্যাং কালচার দেখতে পাবেন না। এসব গ্যাং কালচারকে সমূলে উৎপাটনের চেষ্টা করছি। কিশোরদের এসব গ্যাং গ্র“পে জড়িয়ে যাওয়া এড়াতে সন্তানদের ফলোআপে রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহŸান জানান তিনি।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *