April 27, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

জোর-জবরদস্তির নির্বাচন হবে বলে মেসেজ পাচ্ছি: জিএম কাদের

আগামী সংসদ নির্বাচন জোর-জবরদস্তি ভাবে হবে- এমন মেসেজ সরকারি দল থেকে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।

শরিবার (১ অক্টোবর) সন্ত্রাসী হামলায় পা হারানো জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলামকে দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালী ইউনিয়নে শফিকের ওপর হামলা হয়।

জিএম কাদের বলেন, জোর-জবরদস্তি ভাবে নির্বাচন হবে এই ধরনের একটি মেসেজ সরকারি দল থেকে পাচ্ছি। যেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক, আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি বিশ্বাস করি। কোনো সহিংসতাকে বিশ্বাস করি না। আমাদেরকে কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে। সভা সমাবেশের স্বাধীনতা দিতে হবে, বিক্ষোভ প্রদর্শনীর স্বাধীনতা দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে যদি বাধাগ্রস্থ হই, তাহলে সাধারণ রাজনীতি চলতে পারে না। স্বাভাবিক রাজনীতি শেষ পর্যন্ত বিদায় নেবে। আমাদের দেশের জন্য দুর্যোগের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।

আহত শফিকুল ইসলাম সম্পর্কে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। তার অনেক জায়গায় জখম আছে। বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তার অবস্থা দেখে আশঙ্কাজনক মনে হলো। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, সে স্থিতিশীল আছে।

জিএম কাদের বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতি স্বাভাবিক ভাবে চলবে। এইজন্যই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। গণতান্ত্রিক দেশ হবে। যার জন্য এই দেশের নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্যের বিষয় রাজনীতি করতে গিয়ে হামলা-মামলার শিকার হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, তুষখালীর ইউননিয়নের জাতিয় পার্টি থেকে ইউপি নির্বাচনে আমরা অংশ নিয়েছিলাম। যেখানে বিএনপিসহ অনেক দল অংশ নেয়নি। তা না হলে আওয়ামী লীগ একতরফা ভাবে পাস করতো। আমাদের প্রার্থী যাতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারে আহত শফিকুল উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিল, যদিও আওয়ামী লীগ পাস করেছে। এরপর থেকে বিভিন্ন ধরনের এবং জমি সংক্রান্ত মামলা দেওয়া শুরু হয়েছে। তাকে প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে। এরকম একটা মামলার জন্য কোর্টে হাজিরা দিতে যাচ্ছিল শফিকুল। তখনই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে।

তিনি আরও বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্র যেন এদেশে স্থান লাভ করতে পারে সেজন্য আমরা সব জায়গায় প্রার্থী দিচ্ছি। এসব করতে গিয়েই বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। কিছুদিন আগে গাজীপুরে সভা করতে গিয়েছিলাম সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় লোক করতে দেয়নি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। সেখানেও যদি বাধাগ্রস্ত হই তাহলে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি কোথায় থাকবে। স্বাভাবিক রাজনৈতিক কিভাবে চলবে। এভাবে সাধারণ রাজনীতিকে যদি পথরোধ করে দেয়, তাহলে দেশ বড় ধরনের সহিংসতার দিকে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করছি। এটা কারো কাম্য নয়, এগুলো সুস্থ রাজনীতির অন্তরায়। আগামী নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত।

এক প্রশ্নের জবাবে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দলে কোনো অন্তর্দ্বন্দ্ব নেই, সহিংসতাও নেই। সরকারের কাছে আবেদন করেছি যাতে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।

প্রসঙ্গ, বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলাম সিকদারকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মঠবাড়িয়া-চরখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাঝেরপুল নামক স্থানে এ ঘটনায় এ নেতার পেটের ভূঁড়ি বেরিয়ে যায়। শফিকুল ইসলাম উপজেলার তুষখালী গ্রামের মো. আইউব আলী সিকদারের ছেলে। তিনি স্থানীয় তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *