May 18, 2024
জাতীয়

জবানবন্দি দিতে এসে ‘বোল পাল্টালেন’ আসামি

গরুচুরি মামলার সন্দেহভাজন আসামিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে সোপর্দ না করা এবং পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন আশরাফুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি।

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে এসে নির্যাতন করে বাধ্য করা হয়েছে বলে আসামি অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান আদালত।

এতে ইবি থানায় করা ওই গরুচুরি মামলার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারকে তদন্তসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক মো. মহসিন হাসান এই আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের শিকার আসামি আশরাফুল আদালতের কাছে দেয়া আরজিতে লিখেছেন, ‘গত ৮ নভেম্বর গভীর রাতে আসামি সদর উপজেলার আব্দালপুর মাঠ পাড়ার বাসিন্দা মৃত নায়েব আলী মন্ডলের ছেলে আশরাফুলকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে আসে ইবি থানা পুলিশ। সেখানে একটি কক্ষের মধ্যে ঢুকিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে এবং চোখ বেঁধে বেধড়ক মারধর করে।

লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটুনি দেয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যায় ও গুরুতর জখম হয়। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পুলিশের শেখানো কথা আদালতে স্বীকার করতে চাপ দেয়।

এই অবস্থায় ৩৬ ঘণ্টা পর গরু চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করেন পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান।’

এ সময় আসামির দেয়া জবানবন্দির সঙ্গে শারীরিক অবস্থার বিষয়টি আদালতের নজরে এলে বিজ্ঞ আদালত তাৎক্ষণিক আসামির শারীরিক ও ডাক্তারি পরীক্ষা করতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া ডাক্তারি সনদে আসামিকে শারীরিক নির্যাতনের সত্যতা নিশ্চিত হন আদালত।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ইবি থানাধীন পশ্চিম আব্দালপুর মাঠপাড়া গ্রামের মৃত নায়েব আলী মন্ডলের ছেলে আশরাফুলকে (৪২) সদর কোর্টের জিআরও এএসআই স্বপন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের নীলাফোলা জখম এবং হাঁটুর গোড়ালির সংযোগস্থলে ইনজুরি পাওয়া যায়। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে জেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার হেফাজতে কোনো আসামিকে নির্যাতন করা হয়নি। আসামি আশরাফুলের ডাক্তারি পরীক্ষায় যদি নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমি অভিযোগ মাথা পেতে নেব।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত বলেন, আদালতের কোনো নির্দেশনা আমার কাছে আসেনি। নির্দেশনা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *