May 3, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

ছাত্রলীগ নিয়ে কথা হয়েছে সিদ্ধান্ত হয়নি : ওবায়দুল

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে বের হওয়া খবরের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারকে সৌজন্য সাক্ষাৎ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

শনিবার গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে। বলা হচ্ছে, ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর নানা কর্মকাণ্ডে বিরক্তি প্রকাশ করে কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পর খবরটি গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকালকে আমাদের যে মিটিং ছিল, এটা পার্লামেন্টারি বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা ছিল। রংপুরের বাই ইলেকশন, ২২টি ইউনিয়ন পরিষদ, তিনটি পৌরসভা, সাতটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে অক্টোবরে মাসে। এজন্যই আমরা বসেছিলাম।

মনোনয়নে বোর্ডের মিটিংয়ে এ ধরনের (ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেওয়ার) কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে কাদের বলেন, “কথা প্রসঙ্গে হয়তো কথা আসে। এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত আকারে কোনো কথা হয়নি। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সেটার ফোরাম ওটা (বৈঠক) ছিল না। ওখানে ইনসাইডে আমরা অনেক কথাই বলতে পারি, অনেক আলোচনাই করতে পারি।

এখানে কোনো কোনো প্রসঙ্গে ক্ষোভের প্রকাশও হতে পারে বা কারও কারও রিঅ্যাকশনও আসতে পারে। কিন্তু অ্যাজ এ জেনারেল সেক্রেটারি অব দ্য পার্টি আমার এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা এ মুহূর্তে ঠিক হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা ইমপ্লিমেন্টশন প্রসেসে যায়। এখানে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটতে পারে, প্রতিক্রিয়া হতে পারে কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত আকারে কিছু হয়নি।

ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ কিনা এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, কিছু কিছু ব্যাপারে তো থাকতেই পারে। যেমন- আমাদের ইলেকশনে যারা বিদ্রোহী ছিল, আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে, নেতাদের মধ্যে- এ সব ব্যাপারে তো ক্ষোভ প্রকাশ হয়। কাজেই ছাত্রলীগেরও বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু ব্যাপার আছে, সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনসার্ন থাকতেই পারেন, এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে কোনো স্পেসিফিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি জানি না, কারণ ওই ফোরামে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার বিষয় আসেনি।

ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গণভবন থেকে চলে যেতে বলেছেন বলে খবর এসেছে, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তাদেরকে চলে যেতে বলব কেন? প্রাইম মিনিস্টারের ওখানে দেখা করতে গেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নেতারা গেছে, ছাত্রলীগ গেছে। প্রাইম মিনিস্টারের বাড়িতে তারা গেছে আমি কীভাবে বলি তোমরা এখান থেকে চলে যাও। আসলে কিছু কিছু খবর হাওয়া থেকে পাওয়া হয়ে যায়, একটা হয় আর একটা আসে। নানাভাবে ছড়ায়। বাস্তবতাটা ভিন্ন।

আমার মনে হয় এ ধরনের কিছু হলে আপনারা তো দেখবেনই। এ ধরনের কিছু হতে গেলে তো এটা পাবলিক স্টেটমেন্ট। ডিসিশনটা জানা যাবে, এটা তো ওপেন সিক্রেট হয়ে যাবে, তখন সিক্রেট থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী মিটিংয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে একথা বলেছেন কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, যতক্ষণ এটা সিদ্ধান্ত আকারে না আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত এর সত্যতা আমি স্বীকার করব না।

ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যেগুলো সন্তোষ প্রকাশ করার মতো সেগুলোতে সন্তোষ প্রকাশ করি, আর যেগুলো লোকে পছন্দ করে না সেগুলো আমিও পছন্দ করব না। এটা খুবই স্বাভাবিক এবং সে ব্যাপারে আমি তাদেরকে সতর্ক হতে বলি, সাবধান হতে বলি, তাদেরকে সুনামের ধারায় ফিরে আসতে বলি। তাদেরকে ভালো খবরের শিরোনাম হতে বলি- এটা আমি অহরহ বলে যাচ্ছি।

শনিবারের বৈঠকে রাজনৈতিক আলোচনার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, অপজিশন পার্টি অনুমতি চাইলে স্পেস প্রোভাইড করা হচ্ছে। সভা সমাবেশে কোনো বাধা রাজনৈতিকভাবে করা হচ্ছে না। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল অভিযোগ করছেন খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পাদক বলেন, আমরা বলেছি লিগ্যাল ম্যাটার ও লিগ্যাল ব্যাটেল করেই সমাধান করে করতে হবে। তারা যদি আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারেন সে ধরনের আন্দোলন করতে পারেন। তারা ৫০০ লোক নিয়ে একটি দেড় মিনিট আন্দোলন দেশব্যাপী করতে পারেননি। এখন তাদের নেতারা এক সুরে বলছেন আন্দোলন ছাড়া মুক্তির পথ নেই। তারা আন্দোলন করুক, আন্দোলন করছে না কেন? তাদের কে না করেছে? লেট দেম লঞ্চ আ মুভমেন্ট।

মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে সমঝোতার বিষয়ে কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি যাকেই লিডার অব দ্য অপজিশন বানাবে তাকেই আমরা ওয়েলকাম করব। এটা জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এটা তাদের গঠনতন্ত্রের ব্যাপার, এখানে আমাদের নাক গলানোর বিষয় নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। আমাদের কনসার্ন যেটা, এনজিও নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে, আমরা কি দৃষ্টিকোণ থেকে বলছি এবং কাদেরকে নিয়ে বলছি। আমরা মনে করছি আমাদের কাছে কিছু ইনফরমেশন আছে আমরা খতিয়ে দেখছি। ইনফরমেশন সব ট্রু হবে এমন তো কথা নেই।

ইনফরমেশনে কিছু প্রো পাকিস্তানি এনজিওস, দে আর ক্রিয়েট ডিসটারবেন্স, দে আর ইনসাইটিং ভায়োলেন্স, রিসেন্টলি তারা দোয়া করবে, আল­ার কাছে মোনাজাত করবে, একথা বলে অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করেছে তারা অনেকটা রাজনৈতিক সমাবেশের দিকে গেছে, এসব নিয়ে আমাদের একটা কনসার্ন আছে, সেটি আমরা বলেছি, এক্সপ্রেস করেছি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চাপ তৈরি করবে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, সেটা আমরা বলছি, তাদের সাথে চায়নার ট্রেড ওয়্যার চলছে। আমাদের প্রতিনিধি দল চায়না গেছে। চায়নার মত বড় শক্তি, মিয়ানমার তাদের বন্ধু দেশ সক্ষেত্রে মিয়ানমারের ওপর প্রেসারটা আরও বেশি করে প্রয়োগ করে..এখানে ১১ লাখ লোক আমাদের ইকোলজি, ইকোনমি, ট্যুরিজম এফেক্ট হচ্ছে। এত বড় বোঝা নিতে পারছি না।

তারা (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিনিয়তই মিয়ানমারের ওপর প্রেসার করছে, যাতে তাদের (রোহিঙ্গা) ডিগিনিটি, সেইফটি ও সিটিজেনশিপ নিশ্চিত করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এনজিও নিয়ে সরকারের পর্যালোচনা যুক্তরাষ্ট্র কি দৃষ্টিতে দেখছে জানতে চাইলে কাদের বলেন, তাদের কোনো অভিযোগ আছে বলে মনে করি না।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *