November 24, 2024
জাতীয়শীর্ষ সংবাদ

চিকন করতে বছরে নষ্ট হচ্ছে ১৬ লাখ টন চাল!

মিনিকেটের নামে মোটা চাল কেটে সরু করে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তবে এই চাল উৎপাদন বন্ধে এখনও নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। মিনিকেট চাল বিক্রি বন্ধের আলোচনার মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার মিলারদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, মিনিকেটের নামে প্রতি বছর ১৬ লাখ টন চাল নষ্ট হয়। মন্ত্রীর দাবি, এই বিপুল পরিমাণ চাল নষ্ট না হলে বিদেশ থেকে হয়তো চাল আমদানি করতে হতো না।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে পর্যটন কনফারেন্স হলে ‘বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি ২০২২’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ চালেও পুষ্টি থাকে তবে চাল চিকন করতে গিয়ে পুষ্টির অংশ ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। সারাদেশে বছরে চার কোটি টন ধান ক্রাসিং হয়। মিলাররা বলেন, চাল চিকন করতে গিয়ে ৪-৫ শতাংশ হাওয়া হয়ে যায়। সে হিসেবে বছরে ১৬ লাখ টন চাল হাওয়া হয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। এটা না করলে বিদেশ থেকে হয়তো চাল আমদানি করতে হতো না।’

এসময় মন্ত্রী বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইসের মাধ্যমে দেশের মানুষের জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ সম্ভব বলেও দাবি করেন।

পুষ্টিহীনতা দূর করতে জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের আবাদ বাড়াতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ বায়োফর্টিফাইড জিঙ্কসমৃদ্ধ চাল সম্পর্কে বা এর গুণগুণ সম্পর্কে মোটেই সচেতন নন এবং তারা এই জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল বা ধান সম্পর্কে জানেনও না। এসময় তিনি জিঙ্ক সমৃদ্ধ চালে ভোক্তাকে আকৃষ্ট করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘আজকাল আমরা রাসয়নিক ফর্মুলায় তৈরি করা জিঙ্ক খাচ্ছি কিন্তু ভাতের মাধ্যমে যে এই উপাদানটি আমরা প্রাকৃতিকভাবে পেতে পারি তা জানি না। এই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা দরকার।’

সাধন চন্দ্র বলেন, ‘দেশের মিলাররা ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী চিকন চাল তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করে থাকে। কারণ গ্রাহকরা জিংক চালের জন্য উৎসাহ দেখান না এবং কৃষকরাও এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হন না। কারণ জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের চাল একটু মোটা হয়ে থাকে। গ্রাহক বা ভোক্তা চিকন আর চকচকে চাল পছন্দ করে।’

দেশে খাদ্য ঘাটতি ও দুর্ভিক্ষও হবে না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘অযথা আতংকিত না হওয়ার জন্য বলবো। আমরা সচেতন আছি, দেশে পর্যাপ্ত ধান চালের মজুদ রয়েছে। কেউ অবৈধ মজুদ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হেসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক মো. সাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বেনজির আহম্মদ, হার্বেস্টপ্লাসের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কে এম খায়রুল বাশার,খাদ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশন (গেইন) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, পোর্টফলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, মিলার প্রতিনিধি মোতাহার হোসেন এবং কৃষক প্রতিনিধি আইয়ুব নবী বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১১ জন কৃষক, তিনজন রাইস মিলার ও ১০ জন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

গেইন ও হার্বেস্টপ্লাসের সহযোগিতায় খাদ্য অধিদফতর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *