April 26, 2024
আন্তর্জাতিক

ঘুম ভাঙাতে ডাকা হলো পুলিশ

ভারতের হুগলী জেলার চুঁচুড়া শহরে অদ্ভুত এক ঘুমের সাক্ষী হলেন সবাই, যেখানে পুলিশ ডেকে ঘুম ভাঙাতে হলো গৃহকর্তার।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শহরের বড়বাজার এলাকার একটি ভবনের তিন তলার ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন সৌমেন নিয়োগী (৪২)।

রেলের কর্মকর্তা তিনি। কাজ করেন শিয়ালদহ শাখায়। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সৌমেন নিয়োগীর স্ত্রী বর্ধমানে বাবার বাড়িতে যান। শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথাও হয়। তারপর বেলা বাড়লে ঘটে অন্য ঘটনা। বেশ কয়েকবার ফোন করেও স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।
পরে প্রতিবেশী মনোজিৎ দত্তকে ফোন করে স্বামীকে ডেকে দিতে বলেন। মনোজিৎ বহু বার কলিং বেল বাজান। ডাকাডাকি করেন। কিন্তু সৌমেন নিয়োগীর কোনো সাড়াশব্দ পাননি। এরপর ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দারাও যোগ দেন মনোজিতের সঙ্গে। জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দেন তারা।

অন্যদিকে, শনিবার সকাল থেকে কেউ সৌমেন নিয়োগীকে বাইরে বেরোতে দেখেননি। প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক ধরে ডাকাডাকি, দরজা ধাক্কাধাক্কি চলে। শেষ পর্যন্ত মনোজিৎ বিষয়টি সৌমেন নিয়োগীর স্ত্রীকে জানান। তিনি প্রতিবেশীদের বলেন, ঘরের দরজা ভেঙে ফেলতে। নিজেও বাবার বাড়ি থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান ফেলে রেখে চুঁচুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

এরপর মনোজিৎ চুঁচুড়া থানায় খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর পর মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়। হাতুড়ি, ছেনি দিয়ে মিস্ত্রিরা কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙেন। এরপর ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা শুরু হয়। টানটান উত্তেজনা নিয়ে তখন ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন অন্য বাসিন্দারা। মনের ভেতর এক অজানা আশঙ্কা কাজ করছিল তাদের। তারপর দরজা ভাঙতেই সমস্ত যবনিকা পতন।

ঘুম ভাঙার পর সৌমেন নিয়োগী।
ঘুম ভাঙার পর সৌমেন নিয়োগী।

দরজা ভাঙার পর দেখা যায়, গৃহকর্তা সৌমেন নিয়োগী খালি গায়ে বারমুডা পরে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বেরিয়ে আসছেন। চোখের সামনে প্রতিবেশীদের ভাঙা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হন তিনি। তাকিয়ে থাকেন বেশ কিছুক্ষণ। ঘড়িতে তখন দুপুর আড়াইটে। সম্বিত ফেরে তার। মনে পড়ে যায় স্ত্রীকে ফোন করার কথা। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, এগারোটায় বেরোবেন। কিন্তু তারপরই ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে চুপসে যান। পরে নিজের কীর্তি জেনে নিজেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *