খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চাই : ভিসি
দ. প্রতিবেদক
বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মতবিনিময় করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুসের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর শরীফ হাসান লিমন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভার শুরুতে নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুর সাথে পরিবারের নিহত সদস্যদের এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার জাতীয় চার নেতা ও নব্বইয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, বিভিন্ন সংগঠনসহ আপামর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের এবং বিশেষ করে সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকমানের পরিণত করতে অর্জন ও অভীলক্ষ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে একমাত্র ছাত্ররাজনীতিমুক্ত, সেশনজটমুক্ত, শতভাগ একাডেমিক ক্যালেন্ডার মেনে চলা বিশ্ববিদ্যালয়। এসময় তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু গবেষণার সাফল্য, অতিসম্প্রতি গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রাথমিক পরিকল্পনা সমূহ সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, আপনারা জানেন বিগত কয়েক মাস এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ ভাইস-চ্যান্সেলর ছিলেন না। ফলে দায়িত্বভার গ্রহণের দিন থেকেই আমাকে জমে থাকা দাপ্তরিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজ শুরু করতে হয়। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একক চেষ্টায় সমৃদ্ধিলাভ করতে পারে না। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের অবদান থাকে। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাফল্যের পথে এগিয়ে যায়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে, দেশ-বিদেশে তার সুনাম, সম্মান ও সাফল্যের সংবাদ ছড়িয়ে দিতে সাংবাদিকবৃন্দ অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে আপনারা যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। এজন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকর্ষের অভিলক্ষ্যে এগিয়ে নিতে সব সময় আপনাদের পরামর্শ, সুচিন্তিত মতামত ও ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে এর নেপথ্যশক্তি হচ্ছে শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষাক্ষেত্রে সূচিত অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে শিক্ষিত জাতি গঠনের অভীষ্টলক্ষ্য পূরণ হবে, সাথে সাথে দেশ সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে যাবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। সবশেষ তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অভিযাত্রার পরিকল্পনা এবং গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে এবং শৃঙ্খলা ধরে রাখতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি- আমার মেয়াদে কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিহিংসার শিকার হবে না এবং কোন অনিয়ম-দুর্নীতি আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। আমি সবার সহযোগিতা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে চাই।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়