খুলনা জেলা ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে আ’লীগের দুই শীর্ষ নেতার বিকল্প চিন্তা!
জয়নাল ফরাজী
গত ৭ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আগামী এক মাসের মধ্যে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মহানগর আ’লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক। কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে আগামী এক মাসের মধ্যে কলেজ কমিটিসহ নগর কমিটি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয় মহানগর ছাত্রলীগ নেতাদের।
এ নির্দেশনার পরই নতুন করে আলোচনায় এসেছে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বিষয়টি। জেলা ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভাবনা কি- এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় শীর্ষ দুই নেতা শেখ হারুনুর রশীদ ও এ্যাড. সুজিত অধিকারীর সাথে। এসময় তারা দু’জন তাদের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী জানান, ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ বিবাহিত অবস্থায় কমিটির দায়িত্ব পেয়েছে, আর সেক্রেটারী ইমরান বিবাহিত বলে জনশ্রুতি আছে। এই মুহুর্তে একটা আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্র থেকে করে দিলে সংগঠন চাঙ্গা হবে। আমি চাই আহ্বায়ক কমিটি এসে নতুন করে সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা করুক। যেহেতু বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অছাত্র ও বিবাহিত সেহেতু এখানে কোন কমিটি করার অধিকারও তাদের নেই।’
তিনি আরও জানান, ‘আমি এবং জেলা আ’লীগের সভাপতি মহোদয় কেন্দ্রের সাথে কথা বলে নতুন করে ছাত্রলীগকে সাজানোর উদ্যোগ নেব। আমরা চাইনা বর্তমান কমিটি পরবর্তী কোন কার্যক্রম করুক। ইতোমধ্যে তারা ব্যর্থ হয়েছে। কয়রায় সমস্যা, ডুমুরিয়ায় সমস্যা, রূপসায় কমিটি নেই, কয়েকদিন আগে দাকোপের কমিটিও ভেঙে দেয়া হয়েছে।’
তবে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ শোনালেন তার ভিন্ন চিন্তার কথা। তিনি বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র থেকে। অনেক থানা ও কলেজ কমিটি নেই, সরকারি পার্টি হলে অনেকেই দায় এড়িয়ে যায়। করোনার এই পরিস্থিতি গেলে ছাত্রলীগটা আমরা ভালো করে ঢেলে সাজাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান অবস্থা আমি জানি। ছাত্রলীগকে মজবুত না করা গেলে আওয়ামী লীগ মজবুত সংগঠন হবে না। করোনার কারণে বর্তমান কমিটি অনেক কাজ করতে পারেনি। তাই করোনার পরে প্রকৃত ছাত্র, মাদকমুক্ত, ত্যাগী ও দক্ষ নেতৃত্ব বাছাই করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হবে। কারো একার সিদ্ধান্তে কমিটি পরিবর্তন হবে না।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে মো. পারভেজ হাওলাদার সভাপতি ও মো. ইমরান হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরের বছর ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে কমিটিতে অধিকাংশ অপরিপক্ক, বয়োউর্দ্ধ, বিবাহিত ও অছাত্রদের নাম ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। কমিটির তিন বছর অতিবাহিত হলেও কয়েকটি প্রেস কমিটি অনুমোদন দেওয়া ছাড়া কোন সম্মেলনে কমিটি দিতে পারেনি। জেলার উপজেলা, পৌরসভা, কলেজ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সংগঠনের অবস্থা খুবই নাজুক এবং সব কয়টি উপজেলা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ