May 8, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনা অঞ্চলে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, ঝুঁকিতে বয়স্ক ও শিশুরা

জয়নাল ফরাজী
মৌসুমের শুরুতেই খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে কমে এসেছে তাপমাত্রা। বিভাগজুড়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। যা আগামী দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকবে। শনিবার বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলছেন আবহাওয়াবিদরা। এদিকে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমে শীতের আগমনে ঘরে ঘরে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের এই মহামারীর মধ্যে বয়স্ক ও শিশুরা রয়েছেন ঝুঁকিতে।
গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশার কারণে খুলনায় সূর্যের দেখা মেলেনি। কুয়াশা থাকায় সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচলেও দেখা গেছে ধীরগতি। পরে বাতাসের সাথে সাথে শীতের তীব্রতাও বেড়েছে। এদিন খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলছেন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, ‘খুলনা বিভাগে ইতোমধ্যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। শনিবার বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া যশোরে সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রি ও খুলনায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো।’
তিনি আরও জানান, ‘আগামী দুই-তিন দিন এমন শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এরপর ওঠানামার মধ্যেই ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত এমন তাপমাত্রা থাকতে পারে। আর শীতের কারণে কুয়াশা বেড়েছে। প্রতিদিনই মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে।’
এদিকে শীতকালে সারাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খুলনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও রয়েছেন সতর্ক। প্রতিদিনই নগরী ও জেলায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে অভিযান পরিচালনা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চিকিৎসকরা বলছেন- শীতের এই সময়টায় ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলোই বেশি দেখা যায়। যেমন কাশি, অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এ সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অনেকে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কাশি, কোল্ড অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময়ে শনাক্ত করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতেও রূপ নিতে পারে। ঠাণ্ডার কারণে অনেকের টনসিল বেড়ে গিয়ে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস আছে মোট চার রকমের- যা সাধারণ সর্দিজ্বরের লক্ষণ সৃষ্টি করে। প্রতিটিই সহজে ছড়ায় শীতের সময়। ইনফ্লুয়েঞ্জা, রাইনোভাইরাস, এবং আরএসভি নামে আরেকটি ভাইরাস- এর সবগুলোরই আচরণ মোটামুটি একই রকম।’
তিনি আরও বলেন, ‘শীতজনিত বিভিন্ন রোগে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন বয়স্ক ও শিশুরা। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মৌসুমী ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে; যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়ে সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শীতকালিন অনেক রোগের সাথে করোনার উপসর্গের মিল রয়েছে। এজন্য নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, মাস্ক ব্যবহারসহ সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি সকলের মেনে চলা উচিত।’

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *