May 17, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনায় ট্রিপল মার্ডারের আসামীদের গ্রেফতারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম

আসামীদের পালাতে সহযোগিতা করেন তৎকালীন ওসি শফিকুল : সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

দ. প্রতিবেদক
খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালী এলাকায় ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামী সন্ত্রাসী শেখ জাকারিয়া ও শেখ মিল্টনসহ অন্য আসামীদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন এলাকাবাসী। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারীও দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শহীদ পরিবারের পক্ষে মাসুম বিল্লাহ। এর আগে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এদিকে একই দাবিতে আজ শুক্রবার আসরবাদ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করবে এলাকাবাসী।


সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার মশিয়ালী গ্রামের নিরীহ দিনমজুর মুজিবরকে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ওসি শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে পুলিশকে ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে সাধারণ মানুষের উপর গুলি করে জাকারিয়া, মিল্টন, জাফরিন, কবীর, জিহাদ, জাহাঙ্গীর, মিঠু পারভেজ, আলমগীর, মোরাদসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং অসংখ্য লোক আহত হন। ঘটনাস্থলে খানজাহান আলী থানার তৎকালীন ওসি শফিকুল ইসলামসহ পুলিশের একটি টিম উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে সার্বিক সহযোগিতা করেন। যার জন্য ওসিকে পরের দিন প্রত্যাহার করা হয়। এদের অপরাধের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মামলা দিতে গেলেও মামলা গ্রহণ করেনি ওসি শফিকুল বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানিয়েছেন তারা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আসামী জাকারিয়া, মিল্টনসহ বাকি আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় এলাকাবাসী কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলন শুরু করবে।
এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আবিদ হোসেন, মনিরুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা সরদার আঃ হামিদ, শিরিনা বেগম, তরিকুল ইসলাম, এসএম বকতিয়ার পারভেজ, রবিউল ইসলাম, রেজোয়ান আকুঞ্জি রাজা, আমিরুল ইসলাম, কেসমত আলী, শাহিদুল, মুজিবার রহমান, মিটুল, সাজ্জাদ, আঃ সালাম গাজী, বাবলু, ইউসুপ গাজী, তবিবুর রহমান ও সাবিনা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই রাতে খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেটের মশিয়ালী এলাকায় শেখ জাকারিয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত হন আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম (৬০) ও একই গ্রামের মোঃ ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)। এসময়ে গুলিবিদ্ধ হন মোঃ সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম পরদিন সকালে মারা যান। অপরদিকে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখকে নিহত হয়। এ ঘটনায় মোট ৪ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছিল। পরে নিহত মোঃ সাইফুল ইসলামের পিতা মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) করেছেন।
মামলাটিতে এ পর্যন্ত সাতজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী শেখ জাকারিয়ার বাড়ীর সংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও হত্যাকাণ্ডের মূল খলনায়ক শেখ জাকারিয়া ও তার ভাই মিল্টনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে এখনো চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *