খুলনায় কিশোরীকে অপহরণের পর পাচার করে ধর্ষণ ও দেহ ব্যবসা, আটক ১
দ. প্রতিবেদক
কিশোরীকে অপহরণপূর্বক পাচার করে মধ্যযুগীয় কায়দায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় নিয়োজিতকারী একজন মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। গ্রেফতারকৃত মোঃ আশিক গাজী (২৫) রূপসা উপজেলার কাজদিয়া এলাকার মোঃ মুনসুর গাজীর ছেলে। মঙ্গলবার রাত ১১টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৬ এর সহকারী পরিচালক (লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া) এএসপি মো. মাহবুব উল আলম জানান, গত ১০ আগস্ট জনৈক তরুণী (১৭) যশোর জেলার অভয়নগর থানার বাসিন্দা অভিযোগ দায়ের করেন যে, গত ২০১৯ সালে তাকে জনৈক মোঃ আশিক গাজী (২৫) অপহরণ করে অবৈধভাবে পাচার করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উত্তর প্রদেশের লকনৌ তে নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমকে উক্ত আসামি জোরপূর্বক প্রায় একবছর আটকে রাখে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ধর্ষণসহ তার অশ্লীল ভিডিও ও নগ্ন ছবি মোবাইলে ধারন করে সেগুলো তার ফোনে সংরক্ষণ করে রাখে। পরবর্তীতে জোরপূর্বক ভিকটিমকে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত হতে বাধ্য করে। এছাড়াও ভিকটিমকে দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে বেঙ্গালুরু ও কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে দেহব্যবসার জন্য নিয়ে যায়। অতঃপর গত ২০ জুলাই ২০২০ তারিখে ভিকটিমকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে উক্ত আসামি নিজ বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক আটকে রাখে। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ভিকটিম কৌশলে তার বোনের বাড়ি খুলনার ফুলতলা থানাধীন পায়গ্রাম কসবায় পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামি ভিকটিমকে ফোন দিয়ে পুনরায় ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকটিম ভারতে যেতে রাজি না হলে সে তার মোবাইলে ধারণকৃত ভিকটিমের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। এতে কাজ না হলে উক্ত আসামি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ ভিকটিমের বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের ইমো এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভিকটিমের ধারণকৃত অশ্লীল ছবি এবং ভিডিওর স্ক্রীনশট পাঠাতে শুরু করে।
তিনি আরও জানান, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১০/০৮/২০২০ তারিখ রাত পৌনে ১২টায় র্যাব-৬, (স্পেশাল কোম্পানী) খুলনা এর একটি আভিযানিক দল খানজাহানআলী থানাধীন ১নং আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের আটরা শেখপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কৌশলে আসামী মোঃ আশিক গাজীকে গ্রেফতার করে। এসময় গ্রেফতারকৃত আসামীর দখলে থাকা ২টি মোবাইল ফোনও ২টি সীমকার্ড উদ্ধার করা হয।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তার কাছ থেকে জব্দকৃত দুটি মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে উপরোক্ত ঘটনার প্রাথমিক সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীকে নগরীর খানজাহানআলী থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ