November 24, 2024
আঞ্চলিককরোনালেটেস্ট

খুলনায় করোনা ও উপসর্গে পিতা-পুত্রসহ আরও ৬ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১১০

জয়নাল ফরাজী…
খুলনায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে পিতা-পুত্রসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনা করোনা হাসপাতাল, খুমেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় খুমেকের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ১১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার রাতে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডাঃ ইয়াদ আলী (৭৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় তিনি মারা যান। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া-মানসার সাতবাড়িয়া গ্রামের আলিমুদ্দিন এর ছেলে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাদশা (২৭) নামে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সকালে মারা যাওয়া ফকিরহাটের ইয়াদ আলীর ছেলে। গত ৮ জুলাই রাত ৯টায় খুলনা করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মন্দকাঠি গ্রামের কুদ্দুসের স্ত্রী মরিয়ম (৫০), ডুমুরিয়ার মিকশিমিল এলাকার দ্বীন মোহাম্মদ গাজীর স্ত্রী ফাতেমা (৫৫), নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন মশিআলী এলাকার জাকির সরকারের স্ত্রী হালিমা বেগম (৭৮) ও বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের সেকেন্দার শেখের ছেলে আব্দুস সালাম (৫০)।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও আইসোলেশন ওয়ার্ডের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, জ্বর কাশি শ্বাসকষ্টর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে ভর্তি হন মরিয়ম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ডুমুরিয়ার ফাতেমা জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে। পরে শনিবার সকাল ৬:১৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। খানজাহান আলী থানার হালিমা বেগম একই সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়া ফকিরহাটের আব্দুস সালাম শুক্রবার বেলা ১টায় জ্বর, শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকাল সোয়া ৪টায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃতরা করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় খুমেকের ল্যাবে ১১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৯৮ জন খুলনার। বাকিরা বিভিন্ন জেলার। তাদের নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট পজিটিভ আসলে এ তথ্য জানা যায়।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, শনিবার খুমেকের আরটি-পিসিআর মেশিনে মোট ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার নমুনা ছিলো ২৪২টি। এদের মধ্যে মোট ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যার মধ্যে ৯৮ জন খুলনা জেলা ও মহানগরীর। এছাড়াও বাগেরহাটের ৪ জন, যশোরের ৩ জন, নড়াইলের ২ জন, বরিশাল, বরগুনা ও ঢাকার একজন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *