খুলনায় করোনায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দু’জনের মৃত্যু, উপসর্গে মৃত আরও দু’জন
২৪ ঘণ্টায় নতুন ১০৫ জনের করোনা শনাক্ত
দ. প্রতিবেদক
খুলনায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মোহাম্মদ আলীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও করোনার উপসর্গ নিয়ে খুমেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনার ল্যাবে ১০৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো শুক্রবার রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মোহাম্মদ আলী ইন্তেকাল করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন যহ্মা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গত ৫/৭ দিন যাবৎ তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে নগরীর সিদ্দিকীয় মহল্লার সোনারবাংলা গলি’র বাসায় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সাথে সাথে তাকে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিকাল সাড়ে ৪টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে গাজী মোহাম্মদ আলীর করোনা পরীক্ষার জন্য খুমেক হাসপাতালে নমুনা দেয়া হলে সেখানে করোনা পজিটিভ ধরা পরেছে। তার মৃত্যুতে নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খন্দকার একরামুল হাসান (৬০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নগরীর বাগমারা এলাকার বাসিন্দা খন্দকার একরামুল কবীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। টানা ১ সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পরে গতকাল রাতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খুমেক হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও আইসোলেশন ওয়ার্ডের ফোকাল পার্সন ডা. মিজানুর রহমান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার চালিশিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস মোল্লার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৬৮) গত কয়েকদিন ধরে জ্বর শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় খুমেক হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে একই উপজেলার একতাপুর গ্রামের বাসিন্দা নিমাই চাদের ছেলে বাদল কুসুম (৫২) করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৭টায় তার মৃত্যু হয়। তারা করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তার পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আরটি-পিসিআর ল্যাবে আরও ১০৫ জনের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৮১ জনই খুলনা জেলা ও মহানগরীর। শুক্রবার তাদের নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। খুমেকের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, খুমেকের আরটি-পিসিআর মেশিনে বৃহস্পতিবার মোট ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার নমুনা ছিলো ২৩০টি। এদের মধ্যে মোট ১০৫ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যার ৮১ জন খুলনার। এছাড়াও বাগেরহাটের ১২ জন এবং সাতক্ষীরা ৭ জন, যশোরের ৪ জন ও নড়াইলে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ