খুবি’র দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও অপহরণ চেষ্টা, আটক-১
খুবি প্রতিনিধি
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীকে বহিরাগত দুর্বৃত্ত কর্তৃক মারধরের শিকার হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রায় ৬ ঘন্টা খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। এই সময়ের মধ্যে একজনকে আটক করতে পেরেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
শুক্রবার সকাল দশটায় সায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনার সামনে এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আলহাজ্ব মোল্লা ও আইন ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ সুজন হোসেনকে স্থানীয় লোকজন মারধর করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হামলার শিকার শিক্ষার্থী জানান, তিনি সকালে বাইকযোগে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সামনে থাকা প্রাইভেট কার ব্রেক করলে সেও ব্রেক করে। কিন্তু গাড়ি থেকে বের হয়ে এসে গালাগাল করতে থাকে এবং কয়েকবার ধাক্কাও দেয়। টিউশনিতে যাওয়ার পথে আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী সুজন হোসেন এ ঘটনা দেখে এগিয়ে যান। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দিলে তারা আরও চড়াও হয় এবং আনুমানিক ১০-১৫ জন মিলে বেধড়ক মারধর করে এবং তুলে নিয়ে যাওয়ার উদ্যেশ্যে সুজন হোসেনকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি এ সময় শিক্ষার্থীদের নিকট ঘটনার বিস্তারিত শুনেছেন। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনও একই প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে ছাত্রদের অবরোধ কর্মসূচিতে ইন্দ্রজিৎ নামে ডিবির এক সাব ইন্সপেক্টর হকিস্টিক দিয়ে ভয় দেখান বলে অভিযোগ উঠে। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ওই কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
সড়ক অবরোধের ছয় ঘন্টার মাথায় খুবি’র ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মোঃ শরীফ হাসান লিমন এর সহযোগিতায় বিষয়টির দীর্যমেয়াদী সমাধানের লক্ষ্যে লায়ন্স স্কুলে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস, আইন স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. ওয়ালিউল হাসানাত, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, খুলনা সিটি করপোরেশন এর ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল ও প্যানেল মেয়র-২ আলী আকবর টিপু, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে খুবি’র ছাত্রবিষয়ক পরিচালক বলেন, আজকে ছাত্রদের সাথে যেটা হয়েছে সেটি খুবই দুঃখজনক। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে দ্রুতই মামলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করবো এবং পুলিশ প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেননা ।
সোনাডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এই ঘটনায় জড়িত নয়ন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।