খুবিতে বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্য কর্তৃপক্ষের কমিটি গঠন
দ: প্রতিবেদক
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা অস্বাভাবিকভাবে বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্ত¡রে সমবেত হয়। পরে দুপুর ১২টায় তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। দুপুর ১টায় প্রেস ব্রিফিং করে এবং দুপুর ২টায় তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- আবসন সঙ্কটের দূরকরণ, বেতন ফিসের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বেতন কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও কোডিং পদ্ধতির ব্যবস্থাকরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি অধ্যাদেশের সংস্কার তথা সাংস্কৃতিক অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি ও মুক্তচিন্তা বিকাশে অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত যেসব দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে তার প্রতিকার করা।
শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, ‘একজন সাধারণ সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের অধিকার অর্জন এবং কর্তব্য রক্ষায় সর্বদা সেচ্চার থাকাই জ্ঞান ও মুক্তবুদ্ধির পরিচায়ক। এটিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সেই চেতনার জায়গা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মৌলিক অধিকার এবং শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যান্য বিষয়ে অনেক ঘাটতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখতে পায়। প্রশাসনের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখে এসকল বিষয়ের উদ্বিগ্নতা জানিয়ে এবং এর নিরসনের অনুরোধ করে গত ১৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যম উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। সেদিন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ৭ দিন সময় নেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বুক ভরা আশা নিয়ে ২১ তারিখ পুনরায় ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের সাথে সাক্ষাত করে। সেদিন দীর্ঘ আলোচনার পর শিক্ষার্থীদের সমস্ত দাবির যথার্থ বিবেচনা রেখে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত বিবৃতি দেওয়ার জন্য আরো দশদিন সময় চাওয়া হয়। সেই দশদিন পার হয়ে গেছে গত ১ ডিসেম্বর। তারপর আরো এক মাস আমরা অপেক্ষা করেছি। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। স্মারকলিপি একপ্রকার প্রত্যাখাত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। আমারা অনতিবিলম্বে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের দাবিগুলো না মেনে নেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসুচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
৯ সদস্যের কমিটি গঠন : এদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহবায়ক হলেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. শেখ মোঃ রজিকুল ইসলাম।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. উত্তম কুমার মজুমদার, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রায়হান আলী, শিক্ষা স্কুলের ডিন প্রফেসর এ কে ফজলুল হক, চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর মোছাঃ তাছলিমা খাতুন, আইন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর এস এম জাহিদুর রহমান। কমিটির সদস্য-সচিব হলেন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন। কমিটিকে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ কমিটি জারি করা হয়েছে।