খালিশপুরে আলোচিত বাপ্পি হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ১০ আসামীর আত্মসমর্পণ
দ. প্রতিবেদক
নগরীর খালিশপুরস্থ হাউজিং বাজারের আলোচিত সুমন হোসেন বাপ্পি হত্যাকান্ডের এজাহারভুক্ত ১২ আসামীর মধ্যে ১০ জনকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আসামীরা সবাই হাউজিং বাজারের ৭নং বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন এ ১০ জন আসামীকে গ্রেফতার দেখালেও বিভিন্ন সূত্রমতে আসামীরা রবিবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খালিশপুর থানায় স্ব-ইচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানা গেছে।
গত ১৬ জুন ৭নং ক্যাম্পের কাছে হাউজিং বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী সুজন ও সুমনকে মারধোর করে ১নং বিহারী ক্যাম্পের মোঃ সবুজের পুত্র বাপ্পি। পরেরদিন সকালে আবারো ৭নং বিহারী ক্যাম্পে দেশয়ী অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় বাপ্পি। এ সময় ক্যম্পের বাসিন্দারা তাকে ধাওয়া দেয়। এ ঘটনায় বাপ্পি তার কোমরে থাকা চাপাতি দিয়ে ক্যাম্পের লোকজনের উপর হামলা চালালে ক্যাম্পের বাসিন্দরা সংঘবদ্ধ হয়ে বাপ্পির কাছ থেকে চাপাতি কেড়ে নিয়ে তাকে জখম করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে বাপ্পির অবস্থা অবনতি ঘটলে ওইদিন রাতে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ৪ দিন পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাপ্পির মৃত্যু হয়। এর আগে ১৮ জুন বাপ্পির স্ত্রী রানি খাতুন বাদী হয়ে ১২ জনের নামে খালিশপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম জানান, বাপ্পি খালিশপুর থানার একজন তালিকা ভুক্ত সন্ত্রাসী, তার নামে মাদক, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ ১০টি মামলা রয়েছে। এলাকাবাসীর সাথেও বাপ্পির সম্পর্ক ভালো ছিলনা।
এলাকাবাসী ও হাউজিং বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নাদিম জানান, বাপ্পি বখাটে ছিল, ক্যাম্পের অনেককে মারধোর, তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল।
প্রতিবেশী গৃহিনী নুসরাত বেগম জানান, বাপ্পি বদমেজাজী ও বখাটে ছিল, এলাকায় প্রায় নিরিহ মানুষের সাথে মারামারি করতো। এদিকে বাপ্পি মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে নিরিহ মানুষকে মামলায় জড়ানো ভয়ভিতি দেখানো এবং বাপ্পির দোসররা মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় গত ২৭ জুন খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী বাবুল জানান, ১২ জন আসামীর মধ্যে মোঃ সুজন, মোঃ পলাশ, মোঃ সুমন, সর্ব পিতা মোঃ আলম, শাহিন পিতা জাহিদ, ফারমান পিতা ফারুক, সেলিম পিতা ইব্রাহিম, মইন পিতা জামিল সরদার, নওশাদ পিতা নাছিম, ছেদি পিতা জাহিদ, ইরফান পিতা কালুকে গতকাল পৌনে ১১টায় আলমগর মোড় থেকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শাবানা ও নাদিম নামে দুই আসামী পলাতক রয়েছে। তবে স্থানীয় লোকজন জানায়, ক্যাম্পের নেতা ও বাসিন্দাদের সাথে আলোচনা করে ১০ জন আসামীকে তারা থানায় সোর্পদ করেছে। নাদিম ও শাবানা অসুস্থ থাকায় তাদেরকে পরে সোর্পদ করা হবে।