কয়রায় বাবা-মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হলো পুকুরে
মামলা দায়ের, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ৪
ক্লু উদ্ধারে কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
দ. প্রতিবেদক
খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের একটি পুকুর থেকে বাবা-মা ও তাদের কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে কয়রার বাগালী ইউনিয়নের মাজেদের বাড়ির পাশের পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ (৩৬), তার স্ত্রী বিউটি (৩৪) ও তাদের মেয়ে স্থানীয় জায়গীরমহল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী টুনি (১২)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান জানান, সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় দু’জন ব্যক্তি বাগালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশের পুকুরে পানিতে তাদের মরদেহ ভাসতে দেখে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের মরদেহ দেখতে পান।
তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে হাবিবুল্লাহর শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অস্ত্রের আঘাতে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তার হ-পা বাঁধা ছিল। এছাড়া তার মেয়ে টুনির কপালেও ধারালো অস্ত্রের বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাবিবুল্লাহ কৃষিকাজ ও রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করতেন।
স্থানীয় গ্রাম্য (দফাদার) পুলিশ আব্দুল গফুর বলেন, পুকুরের পানিতে তিনজনের মরদেহ ভেসে থাকার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে তিনজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে প্রথমে ঘটনাটি বাগালি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান ও কয়রা থানা পুলিশকে জানাই।
বাগালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পাশের পুকুর থেকে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, আমি বাড়িতে না থাকায় বিস্তারিত জানাতে পারছি না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করছেন কয়রা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শাহাদাৎ হোসেন। তিনি দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, সকালে বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে বসবাসকারী হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী বিউটি এবং তাদের সপ্তম শ্রেণিতে পড়–য়া কন্যা শিশু টুনির লাশ ভেসে ওঠে পুকুরে। তিনজনের মাথা ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাবিবুল্লাহ পেশায় একজন দিনমজুর। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর পুকুরে লাশ গোপনের চেষ্টা করা হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করেছি।
তিনি আরও জানান, এই হত্যাকাÐের ঘটনায় নিহত হাবিবুল্লাহ গাজীর মা কোহিনুর খানম বাদী হয়ে অজ্ঞদের আসামী করে মঙ্গলবার র সাড়ে ৮টায় মামলা দায়ের করেছেন। ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তারা হলেন- জিয়া (২৭), সুলতানা (২৫), নাঈম (২২) ও কিবরাল (৩০)। প্রাথমিকভাবে দু’টি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে দিন শেষে পুলিশ ঘটনার কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারিনি।