কোভিড-১৯: টিকাতেও অচিরেই ‘ফিরবে না স্বাভাবিক জীবন’
করোনাভাইরাসের একটি কার্যকর টিকা এলেও আগামী বছরের শুরুতে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসবে না বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
কোভিড-১৯ মহামারী অবসানে টিকাকেই আশীর্বাদ হিসাবে দেখছে মানুষ। কিন্তু লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির একদল গবেষকের প্রতিবেদন বলছে, টিকা নিয়ে আমাদের আরও বাস্তববাদী হওয়া দরকার।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিলয় শাহ বলেন, “এই বসন্তে কোনও টিকা সহজলভ্য হয়ে গেলেও তার মানে এই নয় যে, মার্চেই স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসবে।”
আর সেকারণে করোনাভাইরাসে জারি থাকা কড়াকড়ি ধীরে ধীরেই শিথিল করতে হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় বিশ্বজুড়ে ২শ’রও বেশি টিকা তৈরির কাজ চলছে। কেউ কেউ টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে অনেকটা এগিয়েও গেছে।
কিন্তু এখনও কেউই চূড়ান্ত নিরাপত্তার পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি। সবাই টিকা পরীক্ষার নানা ধাপে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কারও টিকা ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি।
মহামারী অবসানে টিকা আশার আলো জাগালেও সেটি তৈরির ক্ষেত্রে অনেকবার ব্যর্থতা আসতে পারে সেটি সবারই জানা। আর তা সহজলভ্য হতেও লেগে যেতে পারে একবছর।
যদিও ব্রিটিশ সরকারের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টারাসহ কেউ কেউ আশার বাণী শুনিয়ে বলেছেন, কিছু মানুষ এবছরই টিকা পেতে পারে। আর গণহারে টিকা দেওয়া শুরু হতে পারে আগামী বছরের শুরুতেই। তবে, লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির প্রতিবেদনে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া হবে অনেক দীর্ঘ।
“টিকা যদি সহজলভ্যও হয়ে যায় তবু একমাসের মধ্যেই যে সবাই টিকা পেয়ে যাবে তা নয়, সেক্ষেত্রে টিকা পেতে বছরে ছয় মাস, নয় মাসও লাগতে পারে। হঠাৎ করে মার্চেই মানুষের জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার প্রশ্ন নেই” – বলেন, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক নিলয় শাহ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামনে এখনও আরও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। বসন্তে টিকা দেওয়া শুরু হলেও প্রাথমিকভাবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাদেরকে টিকা দেওয়া হবে এবং তারপর বৃহত্তর পরিসরে কারা টিকা পাবে তা নিয়ে কাজ করতেই অনেক সময় লেগে যাবে।
ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকাদান প্রক্রিয়া শুরু হলেও সে প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে কয়েক মাস, এমনকী একবছরেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।