কোভিড-১৯: কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সাবেক পরিচালকের মৃত্যু
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেওয়ার প্রথম দিকে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক সরবরাহের ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত ২২ মে এই দায়িত্বে পরিবর্তন আনে সরকার। সেনাবাহিনীতে ফেরানো হয় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদ উল্লাহকে।
শনিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বিকালে বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শহীদ উল্লাহ মারা গেছেন বলে তারা শুনেছেন।
“আমরা একটা মিটিংয়ে ছিলাম। সেখানে তার মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এর বাইরে বিস্তারিত কিছু জানি না।”
সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
ডা. মো. শহীদ উল্লাহ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে বিএমএ জানিয়েছে।
তাদের হিসাবে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এবং এর উপসর্গ নিয়ে ৬৮ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিপিই নীতিমালা অনুযায়ী রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এন-৯৫ মাস্ক পরা জরুরি। কিন্তু মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে ‘এন-৯৫’ লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক।
ফলে সেগুলো আসল মাস্ক কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা; বিষয়টি সে সময় সংবাদ মাধ্যমেও আসে। ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে পরিচালককে চিঠি দেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করে বলেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।
তবে এর পরেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকায় ১৮ এপ্রিল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় সিএমএসডি। পরিচালক ডা. মো. শহীদ উল্লাহ স্বাক্ষরিত প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তার ছেলে, স্বাস্থ্য সেবা সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জড়িয়ে ‘মানহানিকর সংবাদ’ প্রকাশিত হচ্ছে।
“মাস্ক কেনার সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তার ছেলে, স্বাস্থ্য সেবা সচিব বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কোনো সংশ্লেষ নেই।”