করোনাভাইরাস ও অনিশ্চিত বিশ্ব
বিপুল কান্তি চৌধুরী : বিশ্ব আজ অনিশ্চিত ভবিষ্যতে উপস্থিত। ডাক্তার, বিজ্ঞানী অথবা বিশ্ব রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা নেতারা ধরাশায়ী। জাতিতে জাতিতে যে ভেদাভেদ ছিল তা আজ নিচিহ্ন হতে চলেছে। নাস্তিকও আজ ঈশ্বরে বিশ্বাসী হতে শুরু করেছে। দেশে দেশে আজ রাজনীতি চর্চা বন্ধের উপক্রম।বিশ্বের সমস্ত জমকালো আয়োজনের খেলা সম্পূর্ণ বন্ধ। অনিশ্চিত যাত্রায় অলিম্পিকের মত গেম। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অনেকভাবেই ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এখনো যে ভাইরাসের (সার্স-কভ-২) কারণে কভিড-১৯ হয়ে থাকে সেটিকে বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। আরেকটি কারণ হচ্ছে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ধরন নিয়ে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বিভিন্ন অঞ্চল বা দেশ করোনা ভাইরাস চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইরান, ইতালি, মার্কিন মুল্লক কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ায় দেখা গেছে আক্রান্তদের চিহ্নিত করতে করতেই এটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দেশে সরকার যখন স্কুল বন্ধ ও জন সমাবেশ নিষিদ্ধ করলো ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
এদিকে, চীন যে সমাধান বের করেছে তার ফলে মানুষকে কঠিনভাবে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। এজন্য ব্যাপক শ্রম ও অর্থনৈতিক ব্যয় নিশ্চিত করতে হয়েছে। এতে সেখানে সংক্রমণ কমে এসেছে। তবে অনিশ্চয়তা আছে সেখানেও। কারণ কেউ এখনো নিশ্চিত হতে পারছেন না যে, আরো এক দফা করোনার প্রাদুর্ভাব সেখানে দেখা দেবে না।
বাংলার মাটিতে করোনা যে রাজত্ব করতে চলেছে তা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সামাজিক দুরত্ব মানার বালাই নেই আমাদের মাঝে। সরকার সামাজিক দুরত্ব মানার যে বাধ্যবাধকতা লাইনে হাটার চেষ্টা করেছিল মনে হচ্ছে তাই সঠিক ছিল। বাংলার মানুষ হয়তো ভয়াবহতা বুঝতে চাচ্ছে না অথবা বুঝেও না বুঝার তালে আছে।অসংখ্য নেতা কর্মী দলবদ্ধ হয়ে বিতরণ করছে ত্রাণ। ত্রাণ বিতরণ খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে সেটাতে মানা হচ্ছেনা সামাজিক দুরত্ব। যেটা করোনা মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের নেই স্থান, নেই জাত পাতের বিচার, নেই ধর্মের হিসাব। তাই বিবেচক মানুষ হিসাবে, সুনাগরিক হিসাবে প্রত্যেকের উচিত সরকারের নিয়ম নীতি মেনে মানুষের পাশে দাড়ানো। করানো থেকে মুক্তির পথ হয়ত জানা নেই কারোই, তবে সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস রেখে সঠিক নিয়ম মেনে চললে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে। সৃষ্টিকর্তা এই মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করুন সেই প্রার্থনা করি।
লেখকঃ পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক এবং সংবাদকর্মী।