May 3, 2024
করোনাজাতীয়

কক্সবাজারে প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান, ঝুঁকিতে ২২ জন ডাক্তার-নার্স

কক্সবাজারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক বৃদ্ধাকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। তাকে পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) ছাড়া সেবা দেওয়ায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ অন্তত ২২ জন। তাদের হোম কোয়ারেন্টোইনে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বাংলানিউজকে জানান, ওই রোগী যে কিছুদিন আগে সৌদি আরব থেকে এসেছেন, ভর্তির সময় তা বলেননি। ১৮ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি হলেও ২২ মার্চ তার স্বজনরা চিকিৎসকদের এ তথ্য জানান। এরপর থেকে চিকিৎসক-নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। রোগীর স্বজনদের অসর্তকতার কারণেই এখন ঝুঁকিতে পড়েছেন ৮ চিকিৎসক, ৮ নার্স, ৪ কর্মচারীসহ ২২ জন।

তিনি বলেন, ওই রোগীকে সেবা প্রদান করেছেন প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক-সেবিকাসহ এরকম ২২ জনকে আমরা শনাক্ত করেছি।  আপাতত তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ওই করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সবাই আতঙ্কে আছেন। কিছুক্ষণ আগে আমি নিজে গিয়ে ওই রোগীকে মাস্ক দিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত রোগীর অবস্থাও ভালো। পরবর্তীতে কেমন হয় জানি না।

হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সদের পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) দেওয়া হয়েছে কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবাইকে পিপিই দেওয়া আছে। কিন্তু ওই রোগীকে সাধারণ সর্দি-কাশির রোগী মনে করে পিপিই ব্যবহার করেননি তারা।  রোগীর পক্ষ থেকে তথ্য গোপন করায় এ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, কক্সবাজারের খুটাখালীর বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী ওই নারী হজ্ব পালন শেষে গত ১৩ মার্চ সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। কাশি, জ্বর ও গল্যাব্যাথায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৮ মার্চ তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেই থেকে প্রায় এক সপ্তাহ হাসপাতালের পাঁচ তলার ৫০১ নম্বর কেবিনে চিকিৎসা নেন তিনি।

এদিকে ভর্তির চারদিন পর গত ২২ মার্চ সন্দেহ হলে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকা আইইডিসিআর-এ পাঠান চিকিৎসকরা। নমুনা পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার দুপুরে ওই রোগীর করোনা পজেটিভ বলে নিশ্চিত করা হয়।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শাহীন আব্দুর রহমান জানান, করোনা আক্রান্ত ওই নারীকে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিশেষ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া ২২ জনের মধ্যে ৮ চিকিৎসক, ৮ নার্স, ৪ পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, শুধু রোগীকে সেবাদানকারী চিকিৎসক-নার্সসহ ২২ জন নয়, তার পরিবারের সদস্য ছাড়াও সে সব ব্যক্তি যার যার সংস্পর্শে গেছেন তাদেরও শনাক্ত করা জরুরি। তাদের শনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর উদ্যোগ নিতে হবে।  তা না হলে কক্সবাজারে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, নানা কারণে করোনা ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি যারা চিকিৎসা দেবেন তাদের পিপিই নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *