May 19, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

এরশাদের এবারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম : জি এম কাদের

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
জি এম কাদের বলেছেন, তাকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে এরশাদ যে ঘোষণা দিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার তেমন সুযোগ নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে দলের সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
শনিবার মধ্যরাতে সাংবাদিকদের বাসায় ডেকে নিয়ে ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে তার অসুস্থতাকালীন সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন এইচ এম এরশাদ।
দলের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলেই শীর্ষ নেতা নির্বাচনের নিয়ম থাকলেও তার ব্যত্যয় করে এরশাদ সব সময়ই তার একক কর্তৃত্ববলে দলে রদবদল করেন।
এ নিয়ে তার স্ত্রী ও দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদকে বিদ্রোহ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে। জি এম কাদেরকে দলের ভবিতব্য চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নিতে তিনিও নারাজ।
গেল মাসে এরশাদ জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ ফিরিয়ে দেওয়ার পর তৎপর হয়েছিলেন রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতারা। সে সময় তারা যাতে এরশাদের কাছে ঘেঁষতে না পারেন সেজন্য তার বাসায় পাহারা বসিয়েছিলেন কাদের অনুসারীরা।
এরপর শনিবার এরশাদের আকস্মিক ওই ঘোষণার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই আগ্রহ রয়েছে। রবিবার সকালে জিএম কাদের বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলে প্রশ্নই উঠে আসে সাংবাদিকদের কাছ থেকে।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনাকে আবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এটা নিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বিভিন্ন সময় নানা প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন? জবাবে কাদের বলেন, এবারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই এবং প্রশ্ন তোলার সুযোগও কম।
যারা প্রশ্ন তুলেছেন বা তুলতে চাচ্ছেন, তারা প্রশ্ন তোলার জন্যই তুলছেন। এগুলো সবাই জানেন। যারা তুলছেন, তাদের ব্যাপারেও (পদ দেওয়ার) একই ব্যাপার হয়েছিল। সে সময়ে অনেকে অনেক জায়গায় এসেছেন।
তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টিতে ‘অস্থিরতার’ কথা স্বীকারও করেছেন জিএম কাদের। তবে তা ‘ততোটা গুরুতর’ নয় বলেই মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, যারা আমাদের দলের অস্থিরতার কথা বলছেন, তাদের আমি একেবারে নাকচ করে দেব না। অস্থিরতা জীবিত মানুষের স্বাভাবিক হ্যাবিট। অস্থিরতা সব দলেরই থাকে। তবে আমাদের দলে তা অস্বাভাবিক ব্যাপার বা অস্বাভাবিক পর্যায়ে গেছে বলে আমি মনে করি না।
জিএম কাদের একথা বললেও সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। দলের যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুর রহমান জয়ই ছিলেন তার সঙ্গীদের মধ্যে পদের দিক দিয়ে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জি এম কাদের বলেন, পার্টি অফিসটা হল একটা নিউক্লিয়াস। এটা একবারে গভর্নমেন্টের অফিস না যে এ টু জেড সবাই প্রেজেন্ট থাকবে। পার্টির সভা সেমিনার হলে তাদের ডাকলে তারা আসেন।
তার প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য এরশাদ দলের নেতাদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সেজন্য সবার সমর্থন ও সহযোগিতা দরকার। আর এটা নিয়ে যেন কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়, পার্টির চেয়ারম্যান সবাইকে আহŸান জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের চেয়ারম্যানের দৈনন্দিন কাজগুলোর পাশাপাশি আগামী কাউন্সিল উপলক্ষে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে এরশাদ তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান জিএম কাদের।
কেউ দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কাদের বলেন, আমাদের পার্টির নিয়মনীতি অনুযায়ী যেমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে,পার্টির শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য।
বার বার সিদ্ধান্ত পাল্টানোর জন্য আলোচিত এরশাদের এই কর্মকাণ্ডে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না, তা জিএম কাদেরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন এক সাংবাদিক।
জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে বা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও আমাদের রাজনৈতিক দলের অতীত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ ধরনের কার্যক্রম হঠাৎ করে আজকে থেকে হয়নি, এগুলো অনেক দিন থেকে চলছে। এজন্য যে পার্টি বিরাটভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা অন্যান্য দলে যে এর চেয়ে ব্যতিক্রম আছে আমার কাছে এটাও মনে হয় না।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *