ইউক্রেন যুদ্ধ যেভাবে বদলে দিয়েছে পৃথিবীকে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১০০ দিন পার হয়েছে৷ এমন যুদ্ধ গত ৮০ বছরে ইউরোপে আর হয়নি৷ এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়ে৷ কীভাবে প্রভাব ফেলল এই যুদ্ধ?
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
রাশিয়ার আক্রমণের পর প্রায় ৬৮ লাখ ইউক্রেনিয়ান দেশ ছেড়েছেন৷ জাতিসংঘের হিসেবে, এদের প্রায় ৩০ লাখ প্রতিবেশী দেশগুলো ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও আশ্রয় নিয়েছেন৷ জার্মানিতে সাত লাখেরও বেশি ইউক্রেনিয়ান আশ্রয় নিয়েছেন৷ আরো ৭৭ লাখ দেশের ভেতরেই ঘরছাড়া হয়েছেন৷
এদিকে বিশ্বের অর্ধেক সানফ্লাওয়ার ভোজ্য তেল উৎপাদন করে ইউক্রেন৷ এছাড়া দেশটি ১৫ শতাংশ ভুট্টা ও ১০ শতাংশ গম রপ্তানি করে৷ যুদ্ধের কারণে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে৷ এ কারণে এসব পণ্য উৎপাদনকারী অন্য দেশগুলোও অভ্যন্তরীণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য রপ্তানি বন্ধ করেছে৷ গেল মে মাস পর্যন্ত ২৩টি দেশ এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ করেছে৷ ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।
এছাড়া খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি সংকটের মুখে দাম বেড়ে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের৷ বেড়েছে মার্কিন ডলারের দাম৷ ইউরোজোনে গত মাসে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ ৷ সারা বিশ্বেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে৷
রাশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জ্বালানি গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ৷ তারা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও তৃতীয় সর্বোচ্চ কয়লা রপ্তানিকারক৷ ইউক্রেনে হামলা করার পর রাশিয়ার ওপর জ্বালানি নির্ভরতা কমাতে বা বন্ধ করতে একযোগে কাজ করছে ইউরোপের দেশগুলো৷ রাশিয়াও একাধিক ইউরোপীয় দেশে গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে৷ এমন চলতে থাকলে ইউরোপের দেশগুলো জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা এককাট্টা করেছে ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোকে৷ শুধু তাই নয়, রাশিয়ার কারণে নিরাপত্তা হুমকিতে ভোগা অনেক রাষ্ট্র এখন ৩০ সদস্যদেশের এই জোটে যুক্ত হবার ব্যাপারে ভাবছে৷ ফিনল্যান্ড ও সুইডেন এরই মধ্যে তাদের আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে৷