May 1, 2024
আন্তর্জাতিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গোলাবর্ষণ করছে রুশ সেনারা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ইউক্রেনের মারিওপোলে যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল তা ঠিক মত মানা হচ্ছে না অভিযোগ তুলে ‘মানবিক করিডোর’ দিয়ে উদ্ধার কাজ স্থগিত ঘোষণা করেছে নগর কর্তৃপক্ষ।
নগর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রুশ বাহিনী অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মানছে না। তাই তারা উদ্ধারের আশায় জড়ো হওয়া বেসামরিক মানুষদের শহরে ছড়িয়ে পড়তে এবং আশ্রয় খুঁজে নিতে বলেছেন। সিটি কাউন্সিল থেকে টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলা হয়, নগরজুড়ে পুলিশ লাউডস্পিকারে বাসিন্দের উদ্ধার কাজ স্থগিত করার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র মারিওপোল অবরোধ করে রেখেছে। শহরটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পুরো শহরের ঘর উষ্ণ রাখার ব্যবস্থা, পানি সরবরাহ ও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে আছে। পেট্রল পাম্পগুলোতে কোনো জ্বালানি নেই।
টানা তীব্র গোলাবর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া শহরটির প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ অমানবিক পরিস্থিতির পাশাপাশি প্রচণ্ড আতঙ্কে আছে। অবরুদ্ধ শহরটির বেসামরিক বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য মানবিক করিডোরের আহ্বান জানিয়েছিলেন মারিওপোলের মেয়র ভাদিম বইচেঙ্কো।
দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যে শুক্রবার রাতভর আলোচনার পর বেসামরিক বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও একটি নিরাপদ মানবিক করিডোরের বিষয়ে রাজি হয়েছিল রাশিয়ার বাহিনী।
কিন্তু শনিবার টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় সিটি কাউন্সিল থেকে বলা হয়, যেখানে মানবিক করিডোর শেষ হয়েছে সেই জাপোরিজিয়া অঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। ওই পুরো মানবিক করিডোরটিতে যেন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা হয় তা নিয়ে রাশিয়ার অংশের সঙ্গে দেনদরবার করছেন ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা।
এদিকে, মারিওপোল শহরেও এখনো গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নগরীর ডেপুটি মেয়র সেরহি ওরলভ। বিবিসিকে ওরলভ বলেন, রাশিয়ার বাহিনী আমাদের উপর বোমা ফেলা এবং কামানের গোলা নিক্ষেপ অব্যাহত রেছে। এটা পাগলামী। ‘মারিওপোলে কোনো যুদ্ধেবিরতি চলছে না এবং যে মানবিক করিডোরের কথা বলা হয়েছে সেই পথেও যুদ্ধবিরতি নেই। মারিওপোলে অবস্থান করছেন এমন একজন বেসামরিক নাগরিকও বিবিসিকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরও নগরিতে প্রচণ্ড গোলা বর্ষণ চলছে বলে জানান।
৪৪ বছরের প্রকৌশলী আলেক্সান্ডার বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি মারিওপোলে। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। প্রতি তিন থেকে পাঁচ মিনিট পরপর আমি গোলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। যে গ্রিন করিডরের কথা বলা হয়েছে সেটা একদমই ভুয়া। আমি দেখতে পাচ্ছি, যেসব লোকজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা ফিরে আসছে।
এদিকে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ৫ মার্চ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক করিডোর দিয়ে বেসামরিক বাসিন্দাদের উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরই কেবল তিনি রাশিয়ার সঙ্গে পরবর্তীতে আলোচনা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
টেলিগ্রামে এক ভিডিও পোস্টে জেলেনস্কি এ কথা বলেন বলে জানায় রুশ সংবাদ সংস্থা তাস। জেলেনস্কি বলেছেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এটা আজকের প্রধান কাজগুলোর একটি। দেখা যাক, আমরা ভবিষ্যত আলোচনার পথে অগ্রসর হতে পারি কিনা।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *