December 21, 2024
জাতীয়বিশেষ সংখ্যা

আ-মরি বাংলা ভাষা

দ. প্রতিবেদক

৫২-র ভাষা আন্দোলনে মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রথম কাতারে। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক অলি আহাদ লিখেছেন, “৬ই ফেব্রæয়ারী পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির অফিস ১৫০নং মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকার যদি ১৪৪ ধারা ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞা জারী করে তাহা হইলে আইন ভঙ্গ করা হইবে কি হইবে না তাহাও আলোচিত হয়। বেশীরভাগ উপস্থিত সদস্যই আইনভঙ্গের বিপক্ষে মত জ্ঞাপন করেন। কিন্তু, আমি ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে দৃঢ়মত প্রকাশ করি। বৃদ্ধ মওলানা ভাসানী সভাপতির আসন হইতে আমার বক্তব্যের সমর্থনে জোরালো ভাষায় ঘোষনা করিয়া বলেন যে সরকার আমাদের নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনকে ইচ্ছাকৃতভাবে বানচাল করিবার জন্য অন্যায়ভাবে আইনের আশ্রয় গ্রহন করে। সে সরকার কর্তৃক জারীকৃত নিষেধাজ্ঞাকে মাথা নত করিয়া গ্রহন করিবার অর্থ স্বেরাচারের নিকট আত্মসমর্পন। যা হোক, কোনরুপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ব্যতিতই সেইদিনকার সভা মুলতবী করা হয়।” ( জাতীয় রাজনীতি ৪৭-৭৫)

জনাব অলি আহাদ পরিস্থিতি ব্যপক ও সুস্পষ্ট বিশে¬ষন করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে আন্দোলনের অগ্রসর না হলে ভাষা আন্দোলনের এখানেই অনিবার্য মৃত্যু ঘটবে। আর সরবকারী দমননীতির নিকট বশ্যতা স্বীকার করা হবে ও জনগনের স্বতঃস্ফুর্ত সংগ্রামী চেতনার সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করা হবে। ১৪৪ ধরা ভঙ্গের মাধ্যমেই সূচনা হয় ভাষা আন্দোলনের চুড়ান্ত অধ্যায়। যে অধ্যায়ে সালাম, বরকত, রফিক-সহ বহু শহীদের রক্তে লেখা হয় ইতিহাস।

ব্যাপক রক্তপাতের কথা শুনেই মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ছুটে আসেন ঢাকায়। সরকার এতোটা হিং¯্র হতে পারে সে আশংকা আগে কেউ করেনি। পরদিন ভাষা শহীদদের স্মরণে যে গায়েবানা জানাজা হয় মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে মওলানা ভাসানী তাতে উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *