April 27, 2024
আন্তর্জাতিক

আরও কমলো ভারতীয় রুপির মান

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দরপতন যেন থামছেই না। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নতুন করে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে ভারতীয় মুদ্রার মান। ডলারের মূল্যমান কমাতে একটি চুক্তির সম্ভাবনা হোয়াইট হাউজ বাতিল করে দেওয়া এবং ফেডারেল নীতিনির্ধারকদের কঠোর অবস্থানে মার্কিন মুদ্রার মান বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বার্তা সংস্থা পিটিআই’র বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার লেনদেনের একপর্যায়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার মান আরও ৪০ পয়সা কমে ৮১ দশমিক ৯৩ রুপি স্পর্শ করে, যা সর্বকালের সর্বনিম্ন।

ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, মঙ্গলবার দিনের শেষে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান ছিল ৮১ দশমিক ৫৭৮৮। কিন্তু বুধবার দিনের শুরুতেই প্রায় এর মান কমে ৮১ দশমিক ৯৩৫০ দাঁড়ায়। তবে দিনের শেষের দিকে কিছুটা উন্নতি হয়ে ৮১ দশমিক ৯০৫০তে থেমেছে ভারতীয় রুপির মান।

শুধু ভারতীয় রুপিই নয়, মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিশ্বের বেশিরভাগ মুদ্রাই উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ বছর ধনী-বিশ্বের একঝাঁক মুদ্রার বিপরীতে ডিএক্সওয়াই বা ডলারের মূল্যসূচক ১৮ শতাংশ বেড়েছে, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি বন্ডের দায় বৃদ্ধি এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির মুদ্রাগুলোর ওপর ডলারের ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে দেশগুলো সুদের হার আরও বাড়াতে বাধ্য হতে পারে। এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বুধবার এশিয়ান ট্রেডিংয়ে ডলারের সূচক বেড়ে রেকর্ড ১১৪ দশমিক ৬৮-এ পৌঁছেছে। পাশাপাশি, ২০১০ সালের পর প্রথমবারের মতো চার শতাংশ পয়েন্ট ছুঁয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডের দায়।

এদিন ডলারের বিপরীতে দাম কমেছে বিশ্বের আরও কয়েকটি মুদ্রার। আগের সেশনে ০.৪ শতাংশ বাড়লেও বুধবার ডলারের বিপরীতে প্রায় এক শতাংশ দর হারিয়েছে ব্রিটিশ পাউন্ড। এর আগে সর্বকালের সর্বনিম্ন ১ দশমিক ০৩২৭ ডলারে নেমেছিল ব্রিটিশ মুদ্রার মান।

বুধবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে অস্ট্রেলীয় ডলারের মান কমে ০.৬৩৮৯ হয়েছে, যা ২০২০ সালের মে মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন। নিউজিল্যান্ডের ডলারের দামও প্রায় এক শতাংশ কমে ০.৫৫৬৪ হয়েছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর থেকে সর্বনিম্ন।

চলমান সংকটের জেরে বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির আশা দ্রুত মিলিয়ে যাচ্ছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত নতুন পূর্বাভাসে কয়েকটি ধনী দেশের জোট ওইসিডি জানিয়েছে, এ বছর বৈশ্বিক জিডিপি মাত্র তিন শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। অথচ তাদের গত ডিসেম্বরের পূর্বাভাসেও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছে এই জোট।

এসবের ফলে দ্রব্যমূল্য কমছে। অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি আবার ৮৫ মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে, যা গত জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন। আর গত ২৬ সেপ্টেম্বর লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে তামার দাম দুই মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

তবে বিশ্ব অর্থনীতি দুর্বল হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফার আশাও কমিয়ে দেওয়া শুরু করতে পারে। শেয়ারের দামের ওপর ক্রমবর্ধমান সুদের হার যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, আয় কমে যাওয়ার প্রভাবও তেমন বেদনাদায়ক হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *