আবরার হত্যা: পলাতক মোর্শেদের আত্মসমর্পণ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক চার আসামির একজন মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) মোর্শেদ রবিবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালেতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
তবে মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালত পুলিশের সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মাঝহারুল ইসলাম। মোর্শেদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন ইমরুল হাসান। মোর্শেদের বাবা রবিউল ইসলাম দাবি করেছেন, তার ছেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না।
আদালত এলাকায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ৫ অক্টোবর হলের ক্যান্টিনে আসামিরা আবরারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। মিটিংয়ে মোর্শেদ ছিল। কিন্তু ওই সময় তো মোর্শেদ গ্রামের বাড়িতে ছিল। সে কী করে আবরারকে হত্যার পরিকল্পনা করে?
তিনি জানান, মোর্শেদ গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী গিয়েছিল। ৬ অক্টোবর ঢাকায় ফিরে প্রথমে সে তার বড় ভাইয়ের বাসায় যায়। সন্ধ্যায় হলে গিয়েছিল।
মোর্শেদ ঘটনার দিনও আবরারকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়েছিল বলে দাবি করেন রবিউল। তিনি বলেন, অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে, আবরার পানি খেতে চেয়েছিল, তাকে পানি দেওয়া হয়নি, ডাক্তারের কাছেও নিতে দেওয়া হয়নি। আমার ছেলে আবরারকে পানি খাওয়াতে ও ডাক্তারের কাছে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু রবিন (আরেক আসামি) তা শোনেনি। আবরারকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল আমার ছেলে মোর্শেদ। রবিন এজন্য মোর্শেদকে শিবিরও বলেছিল।
আবরার মামলার আরো তিন আসামি এখনও পলাতক। এরা হলেন- এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)।
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যে অভিযোগপত্র জমা দেন, সেখানে আসামি করা হয় মোট ২৫ জনকে। পরে ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করে। এ বিষয়ে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে পরোয়ানা তামিলের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় গত ৩ ডিসেম্বর আদালত তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়ে ৫ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছিল। কিন্তু আসামিদের ব্যক্তিগত কোনো মালামাল না থাকায় ক্রোক করা যায়নি। এরপর পলাতকদের হাজির হতে গত ৫ জানুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয় আদালত। এর ১২ দিনের মাথায় আত্মসমর্পণ করলেন মোর্শেদ।