December 21, 2024
জাতীয়

আগুনে পুড়ল রাজধানীর রূপনগর বস্তি

 

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ঝিলপাড় বস্তির পশ্চিম অংশে বড় ধরনের অগ্নিকাÐে পুড়ে গেছে কয়েকশ ঘর। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাসেল শিকদার জানান, বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে রূপনগরের ‘ত’ বøকের ওই বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হয়।

ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট পৌনে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি। আগুনের মাত্রা বেড়ে গেলে বস্তির পাশের একটি ছয়তলা ভবনেও তা ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস আসতে দেরি করেছে অভিযোগ তুলে তাদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা।

এ এলাকার সাবেক কাউন্সিলর হাজী রজ্জব হোসেন জানান, বস্তির ওই অংশে হাজারের বেশি ঘর আছে। এরমধ্যে অন্তত দুই শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে বলে তারা ধারণা করছেন।

তিনি বলেন, রজনীগন্ধা মার্কেট থেকে ওই বস্তির দূরত্ব সিকি কিলোমিটারের মত। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সেখান দিয়েই ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মানুষের ভিড়ের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়ি ঢুকতে দেরি হয়েছে। তাতে কাজেও বিঘ্ন ঘটেছে। আরামবাগ পয়েন্ট দিয়ে ঢুকলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কাজে সুবিধা হত। অগ্নিকাÐের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। কারও আহত হওয়ার তথ্যও ফায়ার সার্ভিসের কাছে আসেনি।

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার ঝিলপাড় বস্তির পশ্চিম অংশে বুধবার দুপুরে আগুন লেগে পুড়ে যায় কয়েকশ ঘর।ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, সংকীর্ণ গলি গিয়ে তাদের গাড়ি নিয়ে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছে। কাছাকাছি পানির উৎস না পাওয়ার কারণেও কাজে বিঘ্ন ঘটেছে।

বস্তির এই আগুনে ঘর হারানো মধ্যবয়সী নারী হাজেরা খাতুন পাশের এলাকায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিনি জানান, সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যখন কাজে এসেছিলেন, তখন সব স্বাভাবিকই ছিল।

পরে কাজের বাড়ি থেকে বস্তিতে ধোঁয়া উঠতে দেখে ছুটে আসেন। কিছু জিনিসপত্র বের করার চেষ্টা করলেও আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তাকে পিছিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের চোখের সামনেই ছাই হয়েছে সারি সারি ঘর।

রূপনগরে ঝিলপাড় বস্তির পাশে মিরপুর-৭ নম্বর সেকশনের চলন্তিকা বস্তিতে গতবছর অগাস্টে এবং চলতি বছর জানুয়ারিতে দুই দফা অগ্নিকাÐ ঘটে। এবার এ বস্তিতে আগুন লাগার কারণ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে।

যেখানে আগুন লেগেছে, তার পাশেই দেখা যায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা- জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব সম্পত্তিতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের পুনর্বাসনের জন্য ফ্ল্যাট প্রকল্পের নির্ধারিত স্থান।

আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। তিনি জানান, অগ্নিকাÐে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর জন্য পাশের একটি স্কুলে আশ্রয়ের বন্দোবস্ত হয়েছে। তাদের জন্য দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

দুইটা লাগে, চারটা লাগে, পাঁচটা লাগে আমরা তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করব। একজনও খোলা আকাশের নিচে থাকবে না। যে পর্যন্ত এখানে তাদের বসবাস উপযোগী না হবে সে পর্যন্ত আমরা তাদের পাশে আছি। তাদের যেন কোনোভাবে ক্ষতি না হয়। তাদের থাকা খাওয়া, বস্ত্র, বাসস্থানৃ সব ব্যবস্থা আমরা করব। অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে এখানকার বস্তিতে বার বার আগুন লাগে বলে যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে সাংসদকে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।

উত্তরে এই সাংসদ বলেন, যদি এ কারণে আগুন লেগে থাকে, ইতোপূর্বে বলল না কেন আমাকে? যারা গ্যাসের দায়িত্বে আছে, তাদের বললো না কেন? যারা এসব অপযুক্তির কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যদি সত্যি গ্যাসের লাইনের এমন কিছু (অবৈধ সংযোগ) করে থাকে, তাহলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডিজি, পুলিশ আছে এখানে তাদের বলব, তাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *