April 26, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

অভয়নগরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ভিডিও, চাঁদা দাবি : আটক ২

বিশেষ প্রতিনিধি, অভয়নগর
যশোরের অভয়নগর উপজেলার এক স্কুলছাত্রীকে সাংবাদিকতার কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা বাদি হয়ে প্রতারক দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার আটককৃত দুই যুবককে যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃত দুই প্রতারক হলেন, উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের বাশার মোড়লের ছেলে মাহাবুবুর রহমান ওরফে মাহাবুব (৪০) ও নওয়াপাড়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের গুয়াখোলা গ্রামের নাসির বাঘার ছেলে অনিক বাঘা (২৬)।
মামলা সূত্র ও মামলার বাদী স্কুলছাত্রীর মা জানান, তার মেয়ে উপজেলার নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও বাংলাদেশ বেতারের একজন সংগীত শিল্পী। ৩/৪ মাস পূর্বে সাংবাদিকতার কার্ড করার জন্য মাহাবুবের সঙ্গে তার মেয়ের যোগাযোগ হয়। পরবর্তীতে তার মেয়ের নিকট হতে মাহাবুব দুই কপি ছবি ও জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি সংগ্রহ করে। গত ২১ আগস্ট সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় সাংবাদিকতার ফরম পূরণের জন্য মাহাবুব তার মেয়েকে চলিশিয়া গ্রামের একটি মৎস্য ঘেরের অফিসে আসতে বলে। অফিসে পৌঁছানোর পর তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে মাহাবুব।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি কাউকে জানালে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তার মেয়েকে হুমকি দেয় মাহাবুব। কয়েকদিন পর মাহাবুব ও অনিক বাঘা তার মেয়েকে স্থানীয় কাঁচা বাজারের পেছনে একটি স’মিলে দেখা করতে বলে। তার মেয়ে সেখানে পৌঁছালে মাহাবুব ও অনিক বাঘা মোবাইল ফোনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ডিলিট করার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রতারক মাহাবুব জনৈক এমডি নাসির হোসেন নামের একটি ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে তার মেয়ের অশ্লীল ছবি ও ধর্ষণের ভিডিও ছেড়ে দেয়। গত সোমবার বিকালে অনিক বাঘা (০১৯৭৩-০৯৬৪৯৫) তার স্বামীর নিকট ফোন করে সন্ধ্যার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের হুমকি দেয়। এরপর মাহাবুব ফোন করে চাঁদার টাকা পরিশোধ না করলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করে।
স্কুলছাত্রীর মা আরও বলেন, সম্মানহানীর ভয়ে আমার মেয়ে প্রথমে মুখ খোলেনি। পরবর্তীতে মেয়ের কাছ থেকে ঘটনা জানতে পেরে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেছি। প্রতারক মাহাবুব ও তার সঙ্গী অনিক বাঘাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাংবাদিক পরিচয়ে দুই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। যাতে তার মেয়ের মত অন্য কোন মেয়ে এমন প্রতারকের শিকারে পরিণত না হয়।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শামীম হাসান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১) তৎসহ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ৮ (১) (২) (৩) (৭) মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৭। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই আসামীকে গ্রেপ্তারপূর্বক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *