November 24, 2024
আন্তর্জাতিক

অভ্যুত্থানের পর পুতিনের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাপ্রধানের প্রথম বৈঠক

মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর এবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রথম বৈঠক মিন অং হ্লাইংয়ের। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশ দুটির এ বৈঠক অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মিন অং হ্লাইং, যিনি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। অভ্যুত্থানের পর থেকে দু’বার রাশিয়া সফর করলেন তিনি।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তকে ইস্টার্ন ইকনোমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে তার এ সফর। ফোরামে অংশ নিয়ে দুই নেতার সাইডলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর)। চীন, ভারত, জাপান, কাজাখস্তানসহ অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরাও অংশ নিচ্ছেন এই ফোরামে।

বৈঠকে আলোচনা সম্পর্কে আরআইএ বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ‘আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচকভাবে উন্নীত হচ্ছে’। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর পুতিন হলেন দ্বিতীয় বিদেশি নেতা যিনি মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন।

সেনা অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমার গভীর সংকট তৈরি হয়। দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই হাজার মানুষের প্রাণ গেছে এ পর্যন্ত। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পড়ে দেশটির জান্তা সরকার। মস্কোও ইউক্রেন আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে। গত ৬ মাস ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা গ্লোবাল নিউ লাইট জানিয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে মিয়ানমার সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপদেষ্টা আন্তন কোব্যাকভের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে এতে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন ও মিয়ানমারের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। গত মার্চ মাসে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ফোমিন একজন অতিথি হিসেবে সফর করেছিলেন।

দু’দেশের প্রতিনিধিরা ‘রাশিয়ান ফেডারেশন ও মিয়ানমার, দুই সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে ভালো বন্ধু হিসাবে ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা করেছে। সংবাদপত্রটি বলছে যে, ২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্ণ হলো। পর্যটন, তেল ও গ্যাস বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুসহ আরও বিস্তৃত অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে কথা বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মিয়ানমার গত আগস্টে সংকট কাটাতে রাশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল। ভ্লাদিভোস্টকে মিন অং হ্লাইং পুতিনকে বলেন যে রাশিয়ান রুবলে আমদানির জন্য মিয়ানমার প্রস্তুত।

মিয়ানমারে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস এ বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে বলেছিলেন যে রাশিয়া অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ করেছে এমন তিনটি রাষ্ট্রের মধ্যে একটি। এসব অস্ত্র বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা সত্ত্বেও। বাকি দেশগুলো ছিল চীন ও সার্বিয়া।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *