January 22, 2025
জাতীয়

অবৈধ সম্পদ: ডিআইজি প্রিজন বজলুর গ্রেপ্তারের পর কারাগারে

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

সোয়া তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গ্রেপ্তার কারা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক বজলুর রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের তলবে রবিবার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়েছিলেন এই কারা কর্মকর্তা।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অবৈধ সম্পদের অর্থ থেকে রাজধানীর সিদ্বেশ্বরীতে তিন কোটি আট লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কেনা আছে বজলুর রশীদের নামে। বিকালে ঢাকা মহানগর জজ আদালতে নেওয়া হয় বজলুরকে।

মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ার পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক নাসির উদ্দিন। অন্যদিকে জামিনের আবেদন করেন বজলুরের আইনজীবী। বিচারক আল মামুন জামিনের আবেদন নাকচ করে কারা কর্মকর্তা বজলুরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে রবিবারই বজলুরের বিরুদ্ধে কমিশনের সম্মিলিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে অসাধু উপায়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়, ঢাকার সিদ্বেশ্বরী রোডে রূপায়ন হাউজিংয়ের স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের দুই হাজার ৯৮১ বর্গফুট আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন বজলুর রশীদ। এর দাম হিসেবে পরিশোধ করা তিন কোটি ৮ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি প্রদর্শন করতে পারেননি। এমনকি অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়সংক্রান্ত কোনো তথ্যও তার আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি। ফলে তার এই পরিশোধিত তিন কোটি ৮ লাখ টাকা জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য রূপায়ন হাউজিং এস্টেটের সঙ্গে বজলুর চুক্তি করেছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের ৭ জুন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে চেকে পরিশোধ করেন। আর বাকি তিন কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নগদে পরিশোধ করেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঘুষ লেনদের অভিযোগে সকাল ১০ থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রূপায়ন হাউজিং থেকে তার তথ্য যাচাই করে ফ্ল্যাট কেনার সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু ফ্ল্যাট কেনার অর্থের উৎসের বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।

গত ৬ অক্টোবর দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে ডিআইজি প্রিজনস (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে তিনি পাঠিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার।

এজন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

কারা ক্যাডারের ১৯৯৩ ব্যাচের কর্মকর্তা বজলুর রশীদ এখন ঢাকায় কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিআইজি হিসেবে এর আগে সর্বশেষ রাজশাহীতে ছিলেন। জেল সুপার পদে বরগুনায় কর্মজীবন শুরু করে সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ি এবং জ্যেষ্ঠ জেল সুপার হিসেবে চট্টগ্রাম, কুমিল­া ও যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত ছিলেন তিনি।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *