May 3, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

অবশেষে খুলনা কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জাহিদ

দ. প্রতিবেদক
স্ত্রী-সন্তান হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রূপসার শেখ জাহিদ আপিলে খালাস পেয়েছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এসময় জেলগেটে উৎসুক জনতা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তিনি দীর্ঘ ২০ বছর কনডেম সেলে থাকার পর মুক্তির বিষয়ে কথা বলতে গেলে আবেগে কেঁদে ফেলেন। এর আগে বিকেল ৫টায় বিশেষ বাহকে করে বাগেরহাট থেকে জাহিদের খালাস হওয়ার কাগজপত্র খুলনা জেলা কারাগারে আসেন।
জানা যায়, খুলনা জেলার রূপসা থানার নারিকেল চানপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ জাহিদ। ১৯৯৪ সালে বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার রহিমার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ১৯৯৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় মামলা করেন তার শ্বশুর ময়েনউদ্দিন শেখ। মামলায় রহিমা খাতুন (২৮) ও তার দেড় বছরের মেয়ে রেশমা খাতুনকে ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, শেখ জাহিদ তার স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার পর পালিয়ে গেছেন। পারিবারিক কলহের জেরে তাদের হত্যা করেন জাহিদ। এই মামলায় বাগেরহাটের আদালত ২০০০ সালের ২৫ জুন এক রায়ে একমাত্র আসামি শেখ জাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার আগে জাহিদ আত্মসমর্পণ করেন। নিম্ন আদালতের রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স। হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে বিচারপতি বদরুল হক ও বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুইয়ার হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৪ সালের ৩১ জুলাই রায় দেন। এরপর এই রায়ের বিরুদ্ধে কারাগার থেকে ২০০৭ সালে আপিল বিভাগে জেল আপিল করেন জাহিদ।
চলতি মাসে মামলাটি নজরে পড়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চের। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় সর্বোচ্চ আদালত। নিযুক্ত করা হয় শেখ জাহিদের আইনজীবী। কিন্তু মামলার শুনানি করতে গিয়ে আপিল বিভাগ দেখেন নানা অসঙ্গতি। বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরলে দীর্ঘ শুনানী শেষে গত ২৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ জাহিদকে খালাস দেন।
রায়ে বলা হয়, স্ত্রী ও কন্যা হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার কারণে খালাস দেওয়া হলো শেখ জাহিদকে।
এ বিষয়ে খুলনার জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, জাহিদ কনডেমে সেলে থাকার পর তার পরিবার থেকে মামলাটি পরিচালনা করা হত না বলে তাকে জানানো হয়। এরপর তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ডেপুটি জেলার ফখরুদ্দিনকে বিষয়টি দেখভালের জন্য বলা হয়। এসময় ঢাকার লিগ্যাল এইড অফিসার সহযোগিতা করেন। অবশেষে তার আপিলে খালাস হয়েছে।
খুলনা কারাগারের জেলার তারিকুল ইসলাম বলেন, কাগজপত্র বিকেলে আসার পর যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যার পর তাকে খালাস করা হয়।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *