হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন, মেনে চলুন এ সব উপায়
অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে শরীরে বাসা বাঁধে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল আসলে এক ধরনের মেদ যা কোষের পর্দা তৈরি করে ও তাকে বাইরের চোট-আঘাত থেকে বাঁচায়। আরও নানা জৈবিক কাজকর্মের জন্যও কোলেস্টেরল প্রয়োজন।
এমনিতে রোজই শরীরে কোলেস্টেরল তৈরি হয়। প্রতি গ্রাম কোলেস্টেরল তৈরিতে একটা গোটা দিন সময় নেয় যকৃত। প্রতি দিনের খাবার থেকেও সামান্য পরিমাণ কোলেস্টেরল শরীর পায়। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরলের যতটা প্রয়োজন, ততটা স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়ে যায়৷ তাই অনিয়মের হাত ধরে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে এই কোলেস্টেরলও দায়ী।
সাধারণত, তেল-মশলা জাতীয় খাবারের আধিক্য, কম নড়াচড়া, শরীরচর্চায় অনীহা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল, মানসিক চাপ, ট্রান্স ফ্যাটের বাড়াবাড়ি ইত্যাদি কারণে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। ভয় তখনই। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবব্রত রায়ের মতে, ‘‘শরীরে দু’ধরনের কোলেস্টেরল হয়। ব্যাড ও গুড। ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে চাইলে প্রতি দিন অন্তত হাঁটাহাঁটি করুন নিয়ম মেনে। ব্যাড কোলেস্টেরলকে যত দ্রুত কমাতে পারবেন, শরীরে গুড কোলেস্টেরল তার ভূমিকা পালনে ততই সক্রিয় হবে।’’
আরও পড়ুন: ঘন ঘন মাথা ধরে? এই সব ঘরোয়া উপায়েই ব্যথাকে করুন জব্দ
কী ভাবে রুখবেন খারাপ কোলেস্টেরল জমে যাওয়ার প্রবণতাকে?
- চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো প্রতি দিন অন্তত ৩০-৩৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। হাঁটুর কোনও সমস্যা থাকলে— সিঁড়ি ভাঙা, বেশি হাঁটা বারণ হলে শরীর বুঝে কিছু ব্যায়াম করুন। শরীরকে যত বেশি নড়াচড়া করানো যাবে, শারীরিক কসরত যত বাড়াবেন, ততই কোলেস্টেরল কমানোর পথে এগিয়ে যাবেন।
- শুধুমাত্র শরীরের মেটাবলিক রেট বাড়াতেই গ্রিন টি কাজে আসে তা নয়। চিনি ছাড়া গ্রিন টি উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়াটিকেও ত্বরান্বিত করে। এতে খারাপ কোলেস্টেরল দূরে থাকে। ফলে দিনে দু’কাপ গ্রিন টি রাখুন রুটিনে।
- ভিটামিন সি শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের আধিক্য বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই লেবু জাতীয় ফল, কিউয়ি, পেঁপে, পেয়ারা ইত্যাদি যাতে ভিটামিন সি-এর উপস্থিতি বেশি, সে সব রাখুন খাওয়ার তালিকায়।
- স্যামন, ম্যাকরেল, টুনা, সার্ডিনের মতো মাছ, অর্তাৎ যাতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আছে সে সবও রাখুন খাওয়ার তালিকায়।
- রসুন ও দারচিনিও শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতি দিন খালিপেটে এক কোয়া রসুন খেতে পারলে ভাল। একান্ত তা না পারলে সারা দিনের রান্নায় দু’-এক কোয়া রসুন দিন। কফি বা পরিজে এক চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে খাবারও সুস্বাদু হবে আবার কোলেস্টেরলও আয়ত্তে থাকবে।
সংগৃহীত