হারকিউলিস লাগিয়ে হত্যা ভালো কাজ নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, হারকিউলিসের নাম করে ধর্ষণ মামলার আসামিদের কারা হত্যা করছে, সেই রহস্য সরকার উদঘাটন করতে চায়। গতকাল শুক্রবার ঢাকার লালমাটিয়ার একটি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীর এমন বক্তব্য আসে।
তিনি বলেন, কোনো হত্যাকাণ্ডই সরকার কিংবা রাষ্ট্রের কাম্য নয়। এই হারকিউলিস লাগিয়ে যারা হত্যা করছেন, আমি মনে করি, তারাও ভালো কাজ করছেন না। আইনের হাতে তাদের সোপর্দ করা উচিৎ ছিল।
গত এক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ মামলার অন্তত তিন আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের গলায় বাঁধা চিরকুটে লেখা ছিল- ‘ধর্ষণের অপরাধেই’ তাদের এ পরিণতি। এর মধ্যে ঝালকাঠির ভাণ্ডারিয়ার এক আসামির লাশের সঙ্গে চিরকুটে লেখা ছিল- “ধর্ষকের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকরা সাবধান। হারকিউলিস।”
কে বা কারা এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে, সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারছে না পুলিশ। তবে গ্রিক পুরানের বীর হারকিউলিসের নাম চিরকুটে আসার পর বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত হচ্ছে। মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এ ঘটনাকে ‘অশুভ লক্ষণ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, রাষ্ট্র এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে না পারলে জনগণের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
আর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, আইন হাতে তুলে নেওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। এই হারকিউলিস কোথা থেকে এল- তা খুঁজে বের করা পুলিশ বা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব।
শুক্রবার লালমাটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এভাররোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও মুক্তিযুদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকরা কথিত সেই হারকিউলিসের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। তবে তাদের এভাবে হত্যা করা আইনসম্মত হচ্ছে না। যে দুই একটি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো আমরা দেখছি। তদন্ত করে এর রহস্যটা আমরা উদঘাটন করব।
‘সুন্দর বাংলাদেশ’ গড়তে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবার সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রী বলেন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, সংবাদকর্মীসহ সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল সম্ভব হবে। অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য নুরুন্নবি চৌধুরী শাওন এবং বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।