April 20, 2024
আন্তর্জাতিক

সোলেমানির মৃত্যুকে স্বাগত জানিয়েছে আইএস

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ইরানের অভিজাত কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেমানির মৃত্যুকে স্বাগত জানিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। উপরওয়ালার নির্দেশে জিহাদিদের সুবিধার জন্যই সোলেমানিকে হত্যা করা হয়েছে, গোষ্ঠীটির দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনটি বলা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। কিন্তু যারা কাসেম সোলেমানিকে হত্যা করেছে, বিবৃতিতে সেই যুক্তরাষ্ট্রের নাম একবারও নেয়নি তারা।

৩ জানুয়ারি ভোররাতে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় আরো নয় সঙ্গীসহ নিহত হন সোলেমানি। তার মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিশোধ নিতে ইরাকে মার্কিন সৈন্যদের ব্যবহৃত দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ডজনেরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হামলা চালায় ইরান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে জেনারেল সোলেমানিকে হত্যার ঘটনাটি মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইসহ বহু বিষয়ে প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য বিবিসির। ইরাকে বিশাল অংশ দখল করে নেওয়া আইএসের জঙ্গিদের উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী ও জেনারেল সোলেমানির পরিচালনায় ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীগুলো পাশাপাশি থেকে লড়াই করেছিল।

কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই স্থগিত করে। তাদের নিজেদের রক্ষা করাই এখন তাদের মূল কাজ বলে ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র বাহিনীগুলো।

সোলেমানির হত্যার পর ইরান ও ইরাকে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলো এ হত্যার বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করে। এতে এসব বাহিনীর বন্দুকের নল ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনী ও তাদের পশ্চিমা মিত্র বাহিনীগুলো দিকে ঘুরে যায়।

এই পরিস্থিতি আইএসের জন্য বিরাট সুযোগ। ‘খিলাফত’ ধ্বংস হওয়ার পর যে পরিস্থিতির মুখোমুখি তারা হয়েছে তার থেকে বের হয়ে আসার এ সুযোগটি তারা দ্রæততার সঙ্গে গ্রহণ করবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।

অনেক জঙ্গি লড়াইয়ে মারা গেলেও এবং বহু জঙ্গি কারাগারে থাকলেও তাদের সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করা যায়নি। এটি এখনও সক্রিয় আছে এবং ইরাক ও সিরিয়ার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে হত্যাকাÐ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি জোর করে অর্থ আদায়ও বজায় রেখেছে তারা।

আইএসের সাপ্তাহিক সংবাদপত্র আল নাবার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, সোলেমানি ও ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর নেতা মুহান্দিসের মৃত্যু হয়েছে তাদেরই ‘মিত্রদের’ হাতে।

এতে আরও বলা হয়, আইএসের শত্রæরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যস্ত আছে, এতে শত্রæদের শক্তি ও সম্পদ হ্রাস পাবে আর তাতে লাভ হবে জিহাদিদের।

বিবিসি বলছে, ইতিহাস দেখিয়েছে, অস্থিতিশীলতা, বিশৃঙ্খলায় যখন তাদের বিপক্ষ শক্তিগুলো দুর্বল ও বিভক্ত হয়েছে তখনই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে জঙ্গিরা। আগেও এমনটি হয়েছে এবং ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *