সুযোগ পেলে পিলখানা হত্যার ‘সুষ্ঠু বিচারের’ উদ্যোগ নেবে বিএনপি
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ গেলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের উদ্যোগ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওই হত্যাকাণ্ডের একাদশ বার্ষিকীতে মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে ঘটনায় নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা বলেছেন, এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি। ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনী থেকে ওই সময় যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
“আমরাও মনে করে, এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি। আমরা ক্ষমতা যাওয়ার সুযোগ পেলে অবশ্যই এর নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের উদ্যোগ নেব।”
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের সদর দপ্তরে বিদ্রোহ দেখা দেয়। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।
বিদ্রোহের বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ৬ হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়। বিদ্রোহের বিচারের পর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার শুরু হয় সাধারণ আদালতে।
ঢাকা জজ আদালত ২০১৩ সালে দেওয়া রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়।
২০১৭ সালে দেওয়া রায়ে ১৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাই কোর্ট। ১৮৫ জনকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়, তিন থেকে ১০ বছরের সাজা দেয় ২২৮ জনকে।
ওই হত্যাকাণ্ডকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনা বাহিনীর মনোবলকে ভেঙে দিতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
“আজকে আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন, গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।”
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের নেতৃবৃন্দরা স্মৃতিসৌধে ফুল দেন। তারা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে সেখানে কল্যাণ পার্টির প্রধান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, রুহুল আলম চৌধুরী, ফজলে এলাহী আকবর, শাহজাহান, মিজানুর রহমান, সারোয়ার হোসেন ও সাবেক বিমান বাহিনীপ্রধান আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং কোহিনুর হোসেন নূর, শামীমুর রহমান শামীমুর ও শায়রুল কবির খান ছিলেন।