সব প্রকল্প ঠিক সময়ে শেষ হবে, বলেছে চীন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ’একটু বাধাগ্রস্ত’ হলেও পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন চীনা প্রকল্পের কাজ ‘ঠিক সময়েই’ শেষ হবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে সেদেশের সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ”আমার সঙ্গে তাদের (চীনের) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কাউন্সিলর উয়াংয়ের টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। উনি বলেছেন, টেম্পোরারি অনেকে (প্রকল্প সংশ্লিষ্ট চীনা কর্মী) আসতে পারতেছে না। বলেছেন যে, এটাতে কোনো অসুবিধা নাই। যখন অবস্থা ইমপ্রুভ করবে, তখন আমরা ডাবল এফোর্ট দিয়ে… অল প্রজেক্টস অন টাইম শেষ হবে।”
গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল, তা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এরই মধ্যে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ হাজার ছাড়িয়েছে, মৃত্যু হয়েছে সোয়া তিন হাজার মানুষের। এদের অধিকাংশই চীনের নাগরিক হলেও এ রোগটি ইতোমধ্যে বিশ্বের ৭৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন এ করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘বৈশ্বিক সতর্কতা’ জারি করার পর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে চীনা নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসাবে চীনাদের অংশগ্রহণ রয়েছে পদ্মা সেতু, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বাস-র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক বড় প্রকল্পে।
এসব প্রকল্পের কাজে গতি আনার স্বার্থে বুধবার অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। চীন থেকে ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়- এমন বক্তব্য তিনি এর আগে দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তথ্যটা আমার কাছে বেখাপ্পা লাগছে। কারণ আমরা দেখেছি অধিকাংশ লোক (আক্রান্ত ও মৃত) উহান এবং হুবেই প্রদেশের। অন্যান্য দেশে একটা দুইটা করে হচ্ছে। অন্য দেশের মধ্যে সাউথ কোরিয়া, ইতালি আর ইরানের খবর আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি।”সুতরাং উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমি ঠিক জানি না, উনি কোন প্রেক্ষিতে বললেন। আমরাতো দেখি, হাজার হাজার লোক উহান থেকেই হয়েছে। ওটাকে আমরা বলি, এপিসেন্টার অব করোনাভাইরাস।”
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে চীনসহ চার দেশের অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধের পক্ষে যুক্তি দিয়ে মোমেন বলেন, “আমরা নিরুৎসাহিত করতেছি সবাইকে, এ অবস্থায় যাতে আমাদের দেশে না আসে। আর কারও যদি নেহাত আসতে হয়, প্রথমে টেস্ট করে মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে দেখাবে যে, তার করোনাভাইরাস নেগেটিভর্য
বাংলাদেশে আসার জন্য টিকেট কাটা যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠার আগেই পরীক্ষা করে দেখতে এয়ারলাইন্সগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশের লোকদের রক্ষা করার জন্য… কারণ আমার দেশের লোকতো অনেক। যদিও আমরা প্রস্তুত, তবুও অনেক সংখ্যক হলেতো মুশকিল।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই পণ্য মেলার একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।