শেষের কাছে বাংলাদেশের ইনিংস
দেড়শ রানের আগে আট উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বৃষ্টির হানা
মিরাজ আউট হওয়ার পরপর আচমকাই নেমে আসে বৃষ্টি। কিন্তু আম্পায়ার ও ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়ার সময়ই থেমে যায় আবার। তবে বৃষ্টির তীব্রতা বেশি দেখে স্টাম্প তুলে ফেলা হয়েছিল। উইকেট ঢেকে রাখা হয়েছিল কাভারে। সেসব সরিয়ে আবার মাঠ প্রস্তুত করতে খেলা বন্ধ থাকে ৫ মিনিট।
কাইসের প্রথম শিকার
উইকেট শিকারে যোগ দিলেন কাইস আহমেদও। অভিষিক্ত লেগ স্পিনারের প্রথম টেস্ট উইকেট মেহেদী হাসান মিরাজ।
লেগ স্টাম্পে পিচ করা বলটিতে শাফল করে সুইপ করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। বল তার ব্যাটের পাশ দিয়ে শরীরের পেছন দিয়ে গিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে।
১১ রানে আউট হলেন মিরাজ। বাংলাদেশের ইনিংস এগোচ্ছে শেষের দিকে। ৮ উইকেটে রান ১৪৬।
ফিফটির পর মুমিনুলের বিদায়
অতিরিক্ত শট খেলার চেষ্টাই শেষ পর্যন্ত কাল হলো মুমিনুল হকের। উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট উপহার দিয়ে এলেন মোহাম্মদ নবিকে।
আগের কয়েক ওভারে বেশ কয়েকটি লফটেড শট খেলে সফল হয়েছিলেন মুমিনুল। সেই চেষ্টা করেছিলেন আবার। কিন্তু পার করতে পারেননি মিড অন ফিল্ডারকে। দলকে আরও বিপদে ঠেলে বিদায় নিলেন সহজ ক্যাচ দিয়ে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ৬ বার ফিফটি করে প্রতিটিকেই সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছিলেন মুমিনুল। পারলেন না এবার। ফিরলেন ৫২ রানে।
বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৩০।
মুমিনুলের ফিফটি
দলের বিপর্যয়ের মধ্যে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছেন মুমিনুল হক। দারুণ কিছু শটে ফিফটিতে পৌঁছে গেলেন ৬৯ বলে। ইনিংসে বাউন্ডারি ৮টি। তার ত্রয়োদশ টেস্ট ফিফটি।
রিভিউ হারাল আফগানিস্তান
মাহমুদউল্লাহকে আউট করার পর একই ওভারে মোসাদ্দেককে ফেরানোর আশায় ছিল আফগানিস্তান। রশিদের বলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন হয় জোরালো। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় আফগানরা। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, ইমপ্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে।
আফগানিস্তান হারাল তাদের দুটি রিভিউ।
অপ্রতিরোধ্য রশিদ
চা বিরতির পর আরেকটি উইকেট নিতে খুব সময় নিলেন না রশিদ খান। এবার তার শিকার মাহমুদউল্লাহ।
শুরু থেকেই বেশ ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পায়ের ব্যবহার করছিলেন ভালোই। কিন্তু আউট হয়ে গেলেন অনেকটা নিচু হওয়া এক বলে।
গুগলির চেষ্টায় বলটি অনেক শর্ট করে ফেলেন রশিদ। মাহমুদউল্লাহ পেছনে পায়ে পজিশনে চলে যান পুল করতে। কিন্তু বল বাউন্স করেনি খুব বেশি। নিচু হওয়া বল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। হতবাক ব্যাটসম্যান তাকিয়ে থাকেন হতাশায়।
মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ৭ রানে। রশিদ নিলেন চতুর্থ উইকেট। বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১০৪।
বাংলাদেশের হতাশার সেশন
প্রথম সেশনে ব্যাটিংয়ের ছোট্ট সময়টুকুতেই সাদমান ইসলামকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে নেমে এলো আরও বিপর্যয়। এক সেশনে হারাতে হলো চার উইকেট।
সেশনের শুরুটা সৌম্য ও লিটন করেছিলেন সতর্কতায়। কিন্তু কেউই শেষ পর্যন্ত পারেননি লম্বা সময় টিকতে। রশিদ ও নবির স্পিন জুটি নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ৫ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।
এক ওভারেই দুটিসহ রশিদ নিয়েছেন ৩ উইকেট।
মুশফিক এলেন ও গেলেন
সাকিবের বিদায়ের পর বড় ভরসা ছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু রশিদ খানের বলে তিনি বিদায় নিলেন দ্বিতীয় বলেই।
আউটটি নিয়ে অবশ্য প্রশ্নের অবকাশ থাকল যথেষ্টই। রশিদের বলটি ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। বল তার পায়ের অগ্রভাগে বা পিচে পড়ে যায় শর্ট লেগের হাতে। ক্যাচের আবেদন করেন আফগানরা। মাঠের আম্পায়ার সিদ্ধান্ত পাঠান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। তবে তার সফট সিগন্যাল ছিল আউট।
রিভিউয়ে বারবার দেখেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না বল মুশফিকের বুটে লেগেছে নাকি মাটিতে। বলটি খেলার সময় ধুলোর ওড়াউড়ি কাজ আরও কঠিন করে দেয় আম্পায়ারের। ক্যামেরার একেকটি অ্যাঙ্গেল থেকে মনে হচ্ছিল একেকরকম। শেষ পর্যন্ত সফট সিগনালই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ সেই সফট সিগনাল বদলানোর মতো নিশ্চিত প্রমাণ পাননি তৃতীয় আম্পায়ার। বিদায় নিতে হয় মুশফিককে।
এক ওভারেই বাংলাদেশের সেরা দুই ব্যাটসম্যান সাকিব ও মুশফিককে ফেরালেন রশিদ। বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৮৮। টেস্ট ক্যারিয়ারে দশমবার শূন্য রানে ফিরলেন মুশফিক।
অল্পতে শেষ সাকিবওসাকিব আল হাসান ও রশিদ খানের লড়াইয়ে জিতলেন রশিদ। বাংলাদেশ অধিনায়ককে ফেরালেন আফগান অধিনায়ক।
ম্যাচের আগে রশিদ বলেছিলেন, সাকিবকে দ্রুত ফেরাতে চায় তার দল। দায়িত্বটি নিজেই পালন করলেন আফগান অধিনায়ক। রশিদের লেগব্রেকে লাইন কাভার করতে পারেননি সাকিব। তার ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে পায়ে। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর রিভিউ নিয়েছিলেন সাকিব।
খালি চোখে অবশ্য আউটই মনে হচ্ছিল। সাকিব হয়তো আশায় ছিলেন নাটকীয় কিছুর। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি। বল লাগছিল মিডল স্টাম্পে।
২০ বলে ১১ রানে ফিরলেন সাকিব। বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৮৮।
রশিদের শিকার লিটন
পুরোনো রোগে আবার আক্রান্ত লিটন দাস। ভালো খেলতে খেলতেই বাজে এক শটে হারালেন নিজের উইকেট। রশিদ খান উইকেট পেলেন নিজের প্রথম ওভারেই।
নড়বড়ে শুরুর পর উইকেটে জমে গিয়েছিলেন লিটন। খেললেন দারুণ কয়েকটি শট। সম্ভাবনা জাগালেন বড় কিছুর। এরপরই আত্মঘাতী শট। রশিদ খানের লেংথ বলটি পড়তে ভুল করলেন। শর্ট বল ভেবে খেলতে চাইলেন পুল। কিন্তু বল পিচ করে স্কিড করে দ্রুতগতিতে সোজা গিয়ে আঘাত করল স্টাম্পে। সোজা খেলার বল ক্রস ব্যাটে খেলে বোল্ড।
৩ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ বলে ৩৩ রানে আউট লিটন। নেতৃত্বের অভিষেকে প্রথম ওভারেই উইকেটের স্বাদ পেলেন রশিদ। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৫৪।
পারলেন না সৌম্যনিজের সহজতা খেলার সঙ্গে আপোস করেও বড় কিছু করতে পারলেন না সৌম্য সরকার। তার অস্বস্তিতে ভরা ইনিংস শেষ হলো নবির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।
এমনিতে শট খেলতে পছন্দ করলেও এ দিন নিজেকে একেবারেই গুটিয়ে রেখেছিলেন সৌম্য। এগোচ্ছিলেন খুবই মন্থর গতিতে। সেই এগিয়ে চলাও বন্ধ হলো নবির বলে। জোরের ওপর করা ডেলিভারি টার্ন না করে সোজা ঢোকে ভেতরে। সৌম্যর পা আটকে ছিল ক্রিজেই। জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চাইলেন ব্যাট অ্যাঙ্গেলে রেখে। মিস করলেন লাইন। আউট দিতে খুব ভাবতে হয়নি আম্পায়ারকে।
৬৬ বলে খেলেও বাউন্ডারি আসেনি সৌম্যর ব্যাট থেকে, রান করেছেন ১৭। দুই অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংসগুলোর মধ্যে সৌম্যর সবচেয়ে মন্থর টেস্ট ইনিংস এটিই।
২০তম ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৩৮।
রিভিউয়ে টিকলেন লিটন
লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই বড় একটি ধাক্কা থেকে বেঁচে গেল বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নবির বলে লিটন দাসকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার নাইজেল লং। লিটন টিকে গেছেন রিভিউ নিয়ে।
অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে সামনে পা বাড়িয়ে খেলেছিলেন লিটন। বল অনেকটা টার্ন করে লাগে লিটনের প্যাডে। জোরালো আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। উইকেটে সঙ্গী সৌম্য সরকারের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে লিটন নেন রিভিউ। দেখা যায়, টার্ন করে বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। লিটন রক্ষা পেলেন ১ রানে।
লাঞ্চের আগে বাংলাদেশের অস্বস্তি
আলগা শটে সাদমান বিদায় নিয়েছেন প্রথম ওভারে। বাকি সময়টাতেও আফগান বোলিংয়ের সামনে সৌম্য সরকার ও লিটন দাসকে দেখা যায়নি খুব স্বস্তিতে। লাঞ্চের আগে ৪ ওভার বোলিং করতে পেরেছে আফগানরা। বাংলাদেশ করেছে ১ উইকেটে ১ রান।
একমাত্র রানটি এসেছে তিনে নামা লিটনের ব্যাটের কানায় লেগে। ১১ বল খেলে রানের দেখা পাননি ওপেনার সৌম্য সরকার।
শুরুতেই শেষ সাদমানবল ছাড়ায় যাকে মনে করা হয় পারদর্শী, তিনিই বিদায় নিলেন ছাড়ার বলে ব্যাট পেতে দিয়ে! বাজে শটে ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিদায় নিলেন সাদমান ইসলাম।
বাংলাদেশ ইনিংসের প্রথম ওভারের সেটি চতুর্থ বল। আফগান পেসার ইয়ামিন আহমাদজাইয়ের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। পিচ করে অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাচ্ছিল আরও বাইরে। শট খেলার কোনো কারণই ছিল না। কিন্তু দ্বিধান্বিত পায়ে এত বাইরের বলটিই শরীর থেকে দূরে ডিফেন্স করতে চাইলেন সাদমান। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল গেল কিপারের গ্লাভসে।
চতুর্থ টেস্টে এসে প্রথমবার শূন্য রানে আউট হলেন সাদমান। আগের ৫ ইনিংসে তার সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ২৪।
বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারাল স্কোরবোর্ডে রান যোগ হওয়ার আগেই।
সাড়ে তিনশর আগে শেষ আফগানিস্তান
তাইজুলের প্রত্যাশামতো ‘মিরাকল’ হয়নি। তবে আফগানিস্তানকে খুব বেশি দূর যেতেও দেয়নি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন সকালে রশিদ খান ফিফটি করলেও আফগানদের আটকে রাখতে পেরেছে সাড়ে তিনশর মধ্যে।
৮৮ রানে দিন শুরু করা আসগর আফগান করতে পারেননি সেঞ্চুরি। ৩৫ রানে শুরু করা আফসার জাজাই পারেননি পঞ্চাশ ছুঁতে। দ্বিতীয় সকালে ২১ ওভার খেলেছে আফগানরা। ৫ উইকেটে যোগ করতে পেরেছে ৭১ রান।
প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিন সকালেও তাইজুল নিয়েছেন প্রথম দুই উইকেট। পরে দুটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ১১৭ ওভারে ৩৪২ (ইব্রাহিম ২১, ইহসানউল্লাহ ৯, রহমত ১০২, শহিদি ১৪, আসগর ৯২, নবি ০, আফসার ৪১, রশিদ ৫১, কাইস ৯, ইয়ামিন ০, জহির ০*; তাইজুল ৪১-৫-১১৬-৪, সাকিব ২২-১-৬৪-২, মিরাজ ২৮-৫-৭৩-১, নাঈম ১৩-০-৪৩-২, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-৯-১, সৌম্য ৪-০-২৬-০, মুমিনুল ৪-০-৯-০, মোসাদ্দেক ১-০-১-০)।
মিরাজের প্রথমে আফগানদের শেষ
অবশেষে উইকেটের দেখা পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নিজের বলে ক্যাচ নিয়ে ফেরালেন রশিদ খানকে। ৩৪২ রানে থামল আফগানদের ইনিংস।ঝুলিয়ে দেওয়া বলে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন রশিদ। কিন্তু ফ্লাইটে বিভ্রান্ত হয়ে যান খানিকটা। তাই বল ওঠেনি বেশি ওপরে। মিরাজ প্রথম চেষ্টায় ফিরতি ক্যাচ নিতে না পারলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ডাইভ দিয়ে হাতে জমান বল।
৬১ বলে ৫১ রানে শেষ হলো রশিদের ইনিংস। সাড়ে তিনশর আগে থামল আফগানিস্তান।
রশিদের ফিফটি
ব্যাটিংয়ে ক্রমাগত উন্নতির ছাপ আরেকবার রাখলেন রশিদ খান। টেস্ট নেতৃত্বের অভিষেকেই বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করলেন ফিফটি। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে বাড়িয়ে নিচ্ছেন দলের রানও।
২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫০ বলে রশিদ ছুঁয়েছেন তার প্রথম টেস্ট ফিফটি।
সাকিবের দ্বিতীয় শিকারপ্রথম উইকেট পেতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল সাকিবকে। দ্বিতীয়টির জন্য সময় লাগল না খুব বেশি। রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরালেন ইয়ামিন আহমাদজাইকে।
সোজা ডেলিভারি টার্ন করবে ভেবে খেলেছিলেন ইয়ামিন। বল ব্যাটের কানা নিয়ে প্যাডে লেগে যায় স্লিপে সৌম্যর হাতে। আম্পায়ার আউট না দিলে সাকিব রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গে। নিজের ভাগ্য বুঝে ব্যাটসম্যান হাঁটা দেন তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আসার আগেই।
ইয়ামিন ফিরলেন শূন্য রানে। আফগানিস্তান ৯ উইকেটে ৩২৭।
সাকিবের প্রথম
আগের দিন খুব ভালো বোলিং করতে না পারলেও দ্বিতীয় দিন সকালে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পেলেন সাকিব। ফেরালেন কাইস আহমেদকে।
অফ স্টাম্পে একটু জোরের ওপর করা বলে সামনে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন কাইস। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে যায় সিলি পয়েন্টে মুমিনুলের হাতে।
৯ রানে ফিরলেন কাইস। আফগানিস্তানের রান ৮ উইকেটে ৩২২।
আফগানদের সর্বোচ্চ
আগের দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যানকে হারালেও আফগানিস্তান এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। রশিদ খান খেলছেন ঝড়ো ইনিংস। সেই পরিক্রমায় আফগানরা ছাড়িয়ে গেছে টেস্টে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোর।
আগের দুই টেস্টে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৪। চট্টগ্রামে ১০৮ ওভার শেষে আফগানদের রান ৭ উইকেটে ৩২০।
তাইজুলের অসাধারণ ডেলিভারি
আসগরকে ফেরানোর পর বাঁধা হয়ে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান আফসার জাজাইকেও বিদায় করলেন তাইজুল ইসলাম। এবার উপহার পেয়ে নয়, বাঁহাতি স্পিনারদের স্বপ্নের এক ডেলিভারিতে।
ম্যাচের প্রথম দিনে প্রথম উইকেটও দারুণ ডেলিভারিতে নিয়েছিলেন তাইজুল। আফসারকে আউট করা ডেলিভারিটি হলো আরও নিখুঁত। লেগ মিডলে পিচ করা বল সামনে টেনে আনে ব্যাটসম্যানকে। বল টার্ন করে ব্যাটসম্যানের ফরোয়ার্ড ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় অফ স্টাম্পে।
তাইজুল পেলেন চতুর্থ উইকেট। আফসার আউট হলেন ৪১ রানে। আফগানিস্তানের রান ৭ উইকেটে ২৯৯।
আত্মঘাতী আসগরহাতছানি দিচ্ছিল সেঞ্চুরি। প্রতিপক্ষের বোলিংও হচ্ছিল না দারুণ কিছু। কিন্তু নিজেই আত্মঘাতী হয়ে সেঞ্চুরি হারালেন আসগর আফগান। বিদায় নিলেন বাজে শটে।
আগের দিন দারুণ নির্ভরতায় খেলেছিলেন আসগর। ঝুঁকির শট খেলেননি কোনো। দ্বিতীয় সকালে আচমকাই যেন হারিয়ে ফেললেন নিজেকে। হুট করেই তাইজুলকে স্লগ করে উড়িয়ে মারতে চাইলেন, যেন দলের জিততে প্রয়োজন ১ বলে ৬ রান!
ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে বল উঠল আকাশে। মুশফিক সেটি জমালেন তার গ্লাভসে। ৮৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা আসগর ফিরলেন ৯২ রানে।
দিনের শুরুতে বড় একটি উপহার পেল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের রান ৬ উইকেটে ২৭৮।
মাইলফলকের সামনে আসগর
ম্যাচের প্রথম দিনে রহমত শাহর ব্যাট থেকে আফগানিস্তান পেয়েছে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি আসতে পারে দ্বিতীয় দিনেই। ৮৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করবেন আসগর আফগান।
‘মিরাকলের’ আশা
৫ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে আফগানিস্তান। দৃষ্টি তাদের বড় স্কোরে। দ্বিতীয় দিনে তাদের কত রানের মধ্যে আটকাতে চায় বাংলাদেশ? তাইজুল ইসলাম বললেন, “১০ রানের মধ্যেও আসতে পারে বাকি ৫ উইকেট!”
মজা করে নয়, প্রথম দিনের খেলা শেষে সত্যিই এই কথা বলেছেন তাইজুল। দ্বিতীয় দিন সকালে ‘মিরাকল’ কিছু করার আশা করছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। কাজটি যদিও ভীষণ কঠিন। তবু খেলাটা ক্রিকেট বলেই আশা ছাড়ছেন না তাইজুল।