শিশু-কিশোরদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই : প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন খুলনার কিশোরীরা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি থেকে দূরে রেখে আমাদের শিশু-কিশোরদের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর পল্টনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনুর্ধ্ব-১৭) এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭) প্রতিযোগিতা দুইটির ফাইনাল ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশু কিশোররা অত্যন্ত মেধাবী। সেই মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে চাই। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি থেকে আমাদের শিশু-কিশোরদের দূরে রেখে ধীরে ধীরে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, লেখাপড়া শেখার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা একান্তভাবে প্রয়োজন। খেলাধুলা চর্চার মধ্য দিয়ে চরিত্র গঠন, সুস্বাস্থ্য গঠন ও মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুরা যাতে সুপ্ত মেধা বিকাশের সুযোগ পায় এবং তাদের মনও উদার হয়। সবচেয়ে বড় কথা দেশের জন্য গৌরব বয়ে নিয়ে আসে।
ফুটবল খেলার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ফুটবল হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, এটা হচ্ছে বাস্তবতা। ফুটবল সামনে এগিয়ে যাক এটাই আমরা চাই। বালিকাদের খেলা চলার মাঝামাঝি সময়ে স্টেডিয়ামে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভিআইপি গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করেন।
মেয়েদের খেলার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েরা অত্যন্ত চমৎকার খেলেছে। খেলা দেখে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। এসব খেলোয়াড়দের থেকে আগামী দিনে জাতীয় দলের খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। বিকেলে মেয়েদের বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবলের টুর্নামেন্টের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ২-২ তে ড্র হলে খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। ঢাকা বিভাগকে ৪-৩ গোলে ট্রাইব্রেকারে পরাজিত করে জয় ছিনিয়ে নেয় খুলনা বিভাগ। এর আগে দুপুরে একই ভেন্যুতে ছেলেদের বঙ্গবন্ধু অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবলের টুর্নামেন্টের ফাইনালে চট্টগ্রামকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নেয় বরিশাল বিভাগ।
বিজয়ীদের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই চ্যাম্পিয়ন দল পেয়েছে ২ লাখ টাকা করে প্রাইজমানি। বালক বিভাগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন রাব্বী (১০টি)। সেরা গোলরক্ষক চট্টগ্রামের আজগর এবং টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন দলের সাইফুল ইসলাম। খুলনার উন্নতি খাতুন ১২ গোল নিয়ে বালিকা বিভাগে সর্বোচ্চ গোলদাতা ও টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। ঢাকার সুস্মিতা পেয়েছেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভিয়েরা জুনিয়র। স্টেডিয়ামের গ্যালিরি থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবকরাও খেলা দুটো উপভোগ করেন।
২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট টুর্নামেন্ট দুটোর লোগো এবং ট্রফি উন্মোচন করা হয় এবং ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামে বালক ও বালিকা আসরের উদ্বোধনী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্ট দুটোতে উপজেলা পর্যায় থেকে বালকদের খেলা এবং জেলা পর্যায় থেকে বালিকাদের খেলা হয়। বালক বিভাগে উপজেলা পর্যায়ে ৪ হাজার ৮২৮টি, জেলা পর্যায়ে ৫৮১টি, বিভাগীয় পর্যায়ে ৬৮টি ও জাতীয় পর্যায়ে আটটি দলের ৯৮ হাজার ৭৩০ জন ফুটবলার অংশ নেন। অন্যদিকে বালিকা বিভাগের খেলায় জেলা পর্যায়ে ৫৮১টি, বিভাগীয় পর্যায়ে ৬৮টি ও জাতীয় পর্যায়ে আটটি দলে ১১ হাজার ৮২৬ জন ফুটবলার অংশ নেন।