April 12, 2024
জাতীয়

রাঙ্গামাটির পাহাড়ি এলাকায় পানির সংকট

(বাসস) : পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পাঁচশতাধিক গ্রামে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অপরিকল্পিক জুম চাষ ও বন উজাড়, ছড়া ও ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ায় এঅবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ির সাজেক বিলাইছড়ি, বরকলসহ দুর্গম এলাকায় পাঁচশতাধিক গ্রামে অর্ধলক্ষাধিকেরও বেশি লোকের বসবাস। এ সব লোকজন যুগ যুগ ধরে ঝরনা, ছড়া ও ঝিরি থেকে পানি ব্যবহার করে জীবন-যাপন করে আসছেন। অব্যাহত বৃক্ষ নিধনের ও বৃষ্টি কম হওয়ার ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এতে শুস্ক মৌসুমের ওই সব গ্রামগুলোতে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দুই-থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গিয়েও তেমন পানি মিলছে না।
গ্রামবাসী জানান, অন্যান্য বছর এপ্রিল মাসে পানি সংকট থাকে বেশি। কিন্তু এবছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে পাঁচ-ছয় কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়েও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ঝরনা ও ছড়াগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ছোট ছোট পাথরের কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে কোনো রকমে পানি পাওয়া গেলেও তা পানের অনুপযোগী।
সম্প্রতি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় টিলার ওপর গ্রামগুলো। এক গ্রামে ৩০ থেকে ৫০ পরিবার। গ্রামগুলোর আশপাশে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জুম চাষ ও বনদুস্যুরা গাছ কেটে সাবাড় করেছে। এতে নয় নম্বর পাড়া, আট নম্বর পাড়া শিয়ালদাই, হাচ্ছে পাড়া, অরুনপাড়া ও লংকরসহ চার থেকে পাঁচশতাধিক গ্রামে প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
সাজেকের শিয়ালদাই গ্রামের কার্বারী ভুজন ত্রিপুরা ও লক্ষ্মী বালা চাকমা বলেন, গত বছর পুরো ফেব্রুয়ারি মাসে কোনো পানির অভাব ছিল না। এবছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে পানি সংকট শুরু হয়। আট থেকে দশ বছর আগে গ্রামের আশপাশের ছড়াগুলোতে সারা বছর পানি পাওয়া যেত। জুম চাষ ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় দিন দিন পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে ওই সব ছড়া ও ঝরনা গুলো শুকিয়ে গেছে। যেসব পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে সেই পানিও ব্যবহারের অনুপযোগী। এ পানি ব্যবহার করে অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রাঙ্গামাটির জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ জানান, অর্ধলক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করেন। পাহাড়ি এলাকা সমতল এলাকার চেয়ে এক থেকে দুই হাজার ফুট উপরে। সেখানে টিউবওয়েল কিংবা রিংওয়েল বসানোর কোনো ব্যবস্থা নেই।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *