রণাঙ্গনের দিনগুলি
দ. প্রতিবেদক
আজ অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা লাভ করেছি স্বাধীন দেশ ও নিজস্ব পতাকা। এই মাসের ২৬ তারিখে ঘোষিত হয়েছিলো আমাদের স্বাধীনতা। তাই সোনার অক্ষরে লেখা এ দিনটি জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। বুকের গভীরে বরণ করে রাখে দিনটিকে এবং দিনটি এলে জাতি জানায় তাকে সহস্র সালাম আর বিনম্র বিনীত শ্রদ্ধা।
ফেব্রæয়ারি যেমন আমাদের ভাষার মাস; মার্চ তেমনি আমাদের স্বাধীনতার মাস। ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রæয়ারি থেকে ১৯৭১-এর ছাব্বিশে মার্চ পর্যন্ত জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের প্রতিটি দিনই ছিল সংগ্রামমুখর। আর ১৯৭১-এর মার্চ মাসের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহুর্ত ছিল বৈপ্লবিক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী প্রজ্ঞা আর জাতীয় চার নেতার সম্মিলিত সিদ্ধান্তে এবং তাঁদের নির্দেশ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, বিচ্ছিন্নতাবাদের দায় এড়িয়ে, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আজ মুক্ত আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঢাকায় এসে ১২ ও ১৩ জানুয়ারি এই দুই দিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দু’দফা আলোচনায় মিলিত হন।
আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু ও ইায়াহিয়া সাংবাদিকদের জানান, ‘আলোচনা সন্তোষজনক হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট খুব শীঘ্রই ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহŸানে সম্মত হয়েছেন।’ কিন্তু ঢাকা থেকে ফিরে এহিয়া খান লারকানায় ভুট্টোর বাসভবনে যান এবং সেখানে জেনারেলদের সঙ্গে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। মূলত লারকানা বৈঠকেই নির্বাচনী ফলাফল বানচালের নীলনকশা প্রণীত হয়। তারপরই উত্তপ্ত হতে থাকে রাজধানীসহ সারা দেশ। মার্সের এই দিন বেলা ১১টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রেডিওতে ঘোষণা দেন, জাতীয় অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শহরের সবযায়গায় হৈচৈ পড়ে যায়। তখন বাংলার মানুষ অফিস আদালত ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।