মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে খুলনা নগর ও জেলা যুবলীগ
* দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় তৃণমূল হতাশ
* নেতৃত্বে আসতে চায় পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা
জয়নাল ফরাজী
খুলনায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে যুবলীগের কর্মকান্ড। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে জেলা কমিটির সম্মেলন না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে। অপরদিকে নগর আহŸায়ক কমিটিও গঠন হয়েছে ১১ বছর আগে, যার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি আজও। ফলে সংগঠনের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। এই দুই সাংগঠনিক কমিটির নেতৃত্বে আসতে মাঠে রয়েছেন দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা।
জেলা যুবলীগ সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও আক্তারুজ্জামান বাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর আট মাস পর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত হয়। তবে এরপর আর কোনো সম্মেলন হয়নি। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় বেশিরভাগ নেতা জেলা যুবলীগের কাজে অংশ নেন না। এর মধ্যে অনেকেই মূল দলে পদ পেয়েছেন। কেউ মারা গেছেন, কেউ বিদেশে আছেন। এছাড়া কামরুজ্জামান জামাল ও আকতারুজ্জামান বাবু জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। গত সংসদ নির্বাচনে আকতারুজ্জামান বাবু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে জেলা কমিটি।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্র থেকে কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হলে নতুন করে আলোচনায় আসেন নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা। যাদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কিংবা যুবলীগের বিদায়ী কমিটির নেতা। নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় আ’লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ মোঃ আবু হানিফ, জেলা যুবলীগের বর্তমান দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রিয়াজ, অজিত বিশ্বাস, জলিল তালুকদার, এবিএম কামরুজ্জামান, সরদার জাকির হোসেন, জামিল খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজী আলমগীর হোসেন, বিধান চন্দ্র রায়, মাহফুজুর রহমান সোহাগ।
নগর যুবলীগ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি এ্যাড. সরদার আনিছুর রহমান পপলুকে আহŸায়ক এবং এসএম মনিরুজ্জামান সাগর ও হাফেজ মোঃ শামীমকে যুগ্ম-আহŸায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহŸায়ক কমিটি গঠন করা হয়। প্রায় ১১ বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি সম্মেলন করতে পারেনি। ফলে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলছে মহানগর যুবলীগের কর্মকান্ড। দীর্ঘ এক যুগ ধরে কমিটি না হওয়ায় ত্যাগী, পরীক্ষিত ও মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ।
একাধিকবার সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। চলতি বছরের শুরুতে নতুন কমিটি গঠনের গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। নেতাকর্মীরা বলেছেন, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সংগঠনে গতিশীলতা আনতে নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প কিছুই নেই। এক দশক ধরে সে প্রক্রিয়া বন্ধ আছে।
নগর যুবলীগের সভাপতি পদে এ্যাড. সরদার আনিছুর রহমান পপলু ছাড়াও নতুন করে আলোচনায় এসেছেন যুগ্ম আহŸায়ক মনিরুজ্জামান সাগর, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও নগর যুবলীগের সদস্য সফিকুর রহমান পলাশ। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন।
এ বিষয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, ‘এই দুই সাংগঠনিক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে, যা আমরা অবগত। তবে কবে নাগাদ সম্মেলন হতে পারে তা বলতে পারছি না। সম্মেলনের বিষয় সিদ্ধান্ত হলে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’