April 20, 2024
খেলাধুলা

মুশফিক-মিরাজ ঝড়ে কুমিল­াকে হারিয়ে প্লে-অফে খুলনা টাইগার্স

ক্রীড়া ডেস্ক
অনেকটা যেন ম্যাচ শেষের টানটান উত্তেজনা। পুরো খুলনা দল ডাগআউটের সামনে মুশফিকুর রহিমকে উৎসাহ দিতে দাঁড়িয়ে পড়েছে। মিরপুরের গ্যালারি ফেটে পরেছে মুশফিক, মুশফিক চিৎকারে। কিন্তু হলো না। সৌম্য সরকারের বলে দরকার ছিল তিন রান, হলো ১ রান। ৯৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন মুশফিক। তবে তার আগে মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে রেকর্ড জুটি আর খুলনার রানের পাহাড় নিশ্চিত হয়ে গেছে। সেই পাহাড় টপকাতে গিয়ে কুমিল্লা শুরু থেকেই খেয়েছে হোঁচট, ম্যাচের ভাগ্যও আসলে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে প্রথম কয়েক ওভারেই। খুলনা চতুর্থ দল হিসেবে নিশ্চিত করেছে প্লে অফ, কুমিল্লা নিয়েছে বিদায়।
বিপিএলের ইতিহাসে শীর্ষ দশ জুটিতে এর আগে দুজন মাত্র দেশী ব্যাটসম্যানের উপস্থিতি ছিল, শাহরিয়ার নাফীস ও মোহাম্মদ মিঠুন। আর দুজন দেশী ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ জুটি ছিল শামসুর রহমান ও ইমরুল কায়েসের ১৪৫ রান। তাও সেই ২০১৩ সালে। সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেন মুশফিকুর ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ১৬৮ রানের জুটিটা দেশীদের মধ্যে তো বটেই, বিপিএলের ইতিহাসেই সব মিলে পঞ্চম সর্বোচ্চ।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য খুলনার ভালো হয়নি মোটেই। প্রথম ওভারেই এই বিপিএলে অভিষিক্ত ইফরান হোসেনের বলে আউট হয়ে গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রাইলি রুশো অবশ্য পর পর তিনটি ছয় মেরে সেই সুখস্মৃতি তার ভুলিয়ে দিয়েছেন দ্রæত। কিন্তু এরপর আর কোনো উদযাপনের উপলক্ষ পায়নি কুমিল্লা। প্রথম ৬ ওভারে বেশি রান ওঠেনি অবশ্য, ৪৪ রান তুলেছিলেন দুজন। কিন্তু এর পরেই বাড়তে শুরু করে রানের গতি।
দুজনের জুটিতে ৫০ রান এসে যায় ৪১ বলে। ১১ ওভারের মধ্যে উঠে যায় ১০০ রান। মিরাজ ফিফটি পেয়ে যান ৩৩ বলে, দুজনের জুটিতে শত রান আসে ৬৫ বলে। এর মধ্যেই তিনটি ছয় হয়ে গেছে মিরাজের।। ওদিকে মুশফিকও যখন হাত খুলে খেলতে শুরু করে দিয়েছেন। ৩৮ বলে পেয়েছেন ফিফটি। এরপর জ্বলে উঠেছেন আরও বেশি রুদ্রমূর্তিতে। ফন জিলের দুই ওভার থেকে দুজন নিয়েছেন ৩১ রান।
মুশফিকের ঝড়টা বেশি গেছে আবু হায়দার রনির ১৭তম ওভার। ওই ওভারে তিনটি ছয়ের পাশাপ্সহি মেরেছেন একটি চার।সেই ওভারেই পৌঁছে গেছেন নব্বইতে। পরের ওভারেই মিরাজ একটি ডাবলস নিতে গিয়ে টান খেলেন হ্যামস্ট্রিংয়ে, মুশফিকও ভুগছেন ক্র্যাম্পের সমস্যায়। শেষ ওভারে মুশফিকের সেঞ্চুরির জন্য দরকার ৮ রান, প্রথম বলে চারও হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি আর হলো না। তাতে অবশ্য ম্যাচের ফলে কিছু যায় আসেনি।
রান তাড়া করতে নেমে কুমিল্লার পতনের গল্পটা সংক্ষিপ্ত ও নিতান্তই ম্যাড়ম্যাড়ে। শুরু থেকেই আসলে পথ হারিয়েছে কুমিল্লা। সাব্বির রহমানকে ওপেনিংয়ে নিয়ে আসার ফাটকা আগের ম্যাচে কাজে এসেছিল ভালোমতোই। কিন্তু আজ প্রথম বলেই মোহাম্মদ আমিরের দুর্দান্ত এক বলে এলোমেলো হয়ে গেল সাব্বিরের স্টাম্প। প্রথম ওভারেই উইকেট হারাল কুমিল্লা।
স্টিয়ান ফন জিল রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত মরিয়া হয়ে মারিতে গিয়েই আউট হলেন, আরও একবার ভালো একটা ধরলেন। ১৩ বলে ১০ রানে শেষ হলো ফন জিলের ইনিংস। কুমিল্লার সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে টিকে ছিলেন অধিনায়ক ডাভিড মালান। দুই চারে শুরুটাও করেছিলেন। কিন্তু শহীদুলের সেই ওভারেই বলের লাইন মিস করে ৮ রানেই হয়ে গেলেন বোল্ড। ৩২ রানে ৩ উইকেট হারাল কুমিল্লা, আশাও অনেকটা শেষ।
উপুল থারাঙ্গাই একমাত্র রান পাচ্ছিলেন। ২২ বলে ৩২ রান করার পর অকেশনাল বোলার শামসুরের বলে আউট হয়ে গেলেন। সৌম্য আমিরের ইয়র্কারে এলবিডবøæ হয়ে গেলেন, ১০ রান করেই। ইয়াসির আলী আমিনুল বিপ্লববের বলে একটি ছয় মারলেন, আর ইনসাইড আউট করতে গিয়ে পরের বলে ডিপ কাভারে দিলেন ক্যাচ। ফিরলেন ১৬ বলে ২০ রান করে। এরপর রনিকে ফিরিয়েছেন আবু হায়দার। ফারদিন ফিরেছেন ফ্রাইলিংকের বলে। শেষ পর্যন্ত ধুঁকে ধুঁকে করেছে ১২৬।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *