April 26, 2024
জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পেলেন আরও ১০ বীরাঙ্গনা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী এবং রাজাকারদের হাতে নির্যাতিত আরও দশজন বীরাঙ্গনার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। বরগুনা পাথরঘাটার হোগলাপাশা গ্রামের হাসি রানী অধিকারী, নাটোর ল²ীপুরের মোছা. মহারানী, সিলেট গোয়াইনঘাটের মোছা. কোকিলা বেগম এবং সিরাজগঞ্জ তাড়াশের মোছা. পাতাশী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন।
এছাড়া ঝিনাইদহ কাঞ্চননগরের জয়গুন নেছা ও কালিগঞ্জের ফাতেমা বেগম, নাটোর সদরের মোহনপুরের তপেজান, নেত্রকোণা কলমাকান্দার রোকিয়া খাতুন, মুন্সিগঞ্জ সদরের কেওয়ার মাসুদা বেগম এবং নড়াইল লোহাগড়ার মোসা. আফিয়া বেগমের নামও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৬০তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের স্বীকৃতি দিয়ে স¤প্রতি গেজেট জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগ সরকার উদ্যোগ নেওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট ২৭১ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন। তারা প্রতি মাসে ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মত অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রায় চার লাখ বাঙালি নারী পাকস্তানি বাহিনী ও তাদের বাংলাদেশি দোসরদের হাতে নির্যাতিত হন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নির্যাতিত অনেক নারী আশ্রয়হীন হয়ে সামাজিক লাঞ্ছনার মধ্যে আত্মহত্যাও করেন।
১৯৭২ সালে এই নির্যাতিত নারীদের অবদান মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে কম নয় বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে সেসময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আজ থেকে পাকবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত মহিলারা সাধারণ মহিলা নয়,তারা এখন থেকে বীরাঙ্গনা খেতাবে ভূষিত।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সে সময় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। সামরিক সরকারের আমলে উল্টো শুরু হয় যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরইমধ্যে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাও আসে। ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ওই প্রস্তাব পাস হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *