মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছ আহরণে চলমান সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎসজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের নেতারা। অন্যথায় ৯ জুন থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের হুমকি দিয়েছেন তারা।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎসজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি লিটন জলদাস লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এ আল্টিমেটাম দেন।
লিটন জলদাশ বলেন, নগরের উত্তর পতেঙ্গা থেকে সীতাকুণ্ডের ১ নং সৈয়দপুর পর্যন্ত ৩৮টি জলদাস পলীতে ৫৩ হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। বংশ পরম্পরায় মাছ ধরা এবং মাছ বিক্রি করাই তাদের একমাত্র পেশা। কিন্তু কোনো ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই গত ৬ মে অনুষ্ঠিত এক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ২০ মে থেকে ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কথা জানান।
তিনি বলেন, হঠাৎ মন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে বৈঠকে উপস্থিত জলদাস সমবায় সমিতির নেতারা তীব্র প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদের মুখেও মন্ত্রী তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। একতরফা আদেশে বাণিজ্যিক ট্রলারের সঙ্গে ছোট নৌকা ও বোটের মাধ্যমে সাগরে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন।
লিটন জলদাশ বলেন, ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ৫৩ হাজার জেলে পরিবারের প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ অনাহারে- অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে দাদন এবং এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করতে না পারায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা এ সর্বনাশা পরিস্থিতির আশু সমাধান চাই।
তিনি বলেন, সরকার ৩৮টি জেলে পলীর মধ্যে ৩৩টি জেলে পলীর পরিবার প্রতি ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। ৬৫ দিন একটি পরিবার চলার জন্য মাত্র ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ গরিব জেলে পরিবারের প্রতি উপহাস ছাড়া কিছুই নয়। ইলিশের এ ভরা মৌসুমে সাগরে আমরা মাছ ধরতে চাই। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার দাবি জানাই।
‘অন্যথায় আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না। ভুখা-নাঙ্গা পরিবারগুলো নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বাধ্য হয়ে ৯ জুন থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচী দেবে।’ যোগ করেন জলদাস স¤প্রদায়ের এ নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে জলদাস স¤প্রদায়ের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ক্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত।