September 16, 2024
আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ ট্যাংকার আটকানোর চেষ্টা ইরানের

পারস্য উপসাগরে কয়েকটি ইরানি নৌকা একটি ব্রিটিশ ট্যাংকারের (তেলবাহী জাহাজ) গতিরোধ করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাজ্য। শেষ পর্যন্ত, নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের সাহায্যে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা সংঘাত ছাড়াই ট্যাংকারটি হরমুজ প্রণালি পার হতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক মুখপাত্র।

এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নৌকাগুলো ইরানের ‘এলিট বাহিনী’ রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) ছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানায়, ব্রিটিশ হেরিটেজ ট্যাংকারটি হরমুজ প্রণালি থেকে বের হওয়ার সময় তিনটি নৌকা এর গতিরোধ করে। সেসময় এর পাহারায় থাকা এইচএমএস মনট্রোজ যুদ্ধজাহাজটি সামনে এসে দাঁড়ায় ও অস্ত্র তাক করে তাদের পথ থেকে সরে যেতে বলে। তবে, শেষ পর্যন্ত কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। ট্যাংকারটি নিরাপদে বের হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পৌঁছায়।

গত সপ্তাহে, জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের একটি ট্যাংকার আটক করে ব্রিটিশ র‌য়্যাল মেরিন। জাহাজটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে সিরিয়া যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করা হয়।

এর জবাবে ইরান বলেছিল, তাদের জাহাজটি দ্রুত ছেড়ে না দিলে ব্রিটিশ ট্যাংকার আটকানো হবে। পাশাপাশি, এ ঘটনাকে ‘এক ধরনের ডাকাতি’ আখ্যা দিয়ে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া বার্তা দেয় তেহরান।

এছাড়া, বুধবার (১০ জুলাই) ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও যুদ্ধজাহাজ সঙ্গে নিয়ে ট্যাংকার পরিচালনার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যকে ভীত ও অসহায় বলে কটাক্ষ করেন।

তবে, যুক্তরাজ্যের জাহাজ আটকানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের সঙ্গে বিদেশি কোনো জাহাজের গতিরোধ বা সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে ইরান। এরই মধ্যে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে বেরিয়ে ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তেলসমৃদ্ধ দেশটির তেল-বাণিজ্য একেবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যদিও, তার ইউরোপিয়ান মিত্ররা এ বিষয়ে এখনো সাড়া দেননি।

তবে, ইরান-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক দিন দিন শীতল হচ্ছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। গত জুনে দু’টি তেলবাহী জাহাজে হামলার পেছনে ইরানের হাত আছে বলে অভিযোগ করে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি, ব্রিটিশ-ইরানি নাগরিক নাজানিন জাঘারি-র‌্যাটক্লিফকে নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। ২০১৬ সালে গুপ্তরবৃত্তির দায়ে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইরানের আদালত। যদিও, তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তখন থেকেই নাজানিনকে মুক্তি দিতে ইরানের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাজ্য।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *