December 8, 2024
আন্তর্জাতিক

বিশ্বজুড়ে ৩২ নারী সাংবাদিক কারাবন্দী: সিপিজে

নিজ দেশে রাজনীতি, দুর্নীতি ও মানবাধিকার নিয়ে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে কারারুদ্ধ হয়েছেন ৩৩ নারী। এর মধ্যে একজন গত ফেব্রুয়ারিতে ছাড়া পেয়েছেন। এখনো বন্দী ৩২ জন। অন্যের অধিকার আদায়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এসব নারী সাংবাদিকের কারাবন্দী হওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। বিশ্বজুড়ে যখন সাড়ম্বরে নারী দিবস উদযাপন হচ্ছে, তখন তাঁদের বিষয়টি তুলে ধরেছে এই সংগঠন। গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২৫১ জন কারাবরণ করা সাংবাদিকের মধ্যে ৩৩ জন নারী। সাংবাদিকতার কারণেই কারাগারে যেতে হয়েছে তাঁদের। বেশির ভাগ সাংবাদিকই তুরস্ক ও চীনের। তুরস্কের ১৪ জন, চীনের ৭ জন, সৌদি আরবের ৪ জন, ভিয়েতনামের ২ জন, ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের ২ জন, মিসরের ২ জন ও সিরিয়ার ১ জন।
কারাবন্দীদের মধ্যে তুরস্কের সাংবাদিক জেহরা দোগান রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার অভিযোগে সাজা ভোগের পর গত মাসে মুক্তি পেয়েছেন। কারাবন্দী ৩২ নারী সাংবাদিকের মধ্যে ২৬ জন রাজনৈতিক ইস্যুতে লিখতেন। এসব সাংবাদিক দুর্নীতি, মানবাধিকার ও রাজনীতি নিয়ে লেখার কারণে কারাবন্দী হন। অনেকে সম-অধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আটক হয়েছেন। নারীদের গাড়ি চালনার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় চার নারী সাংবাদিককে বন্দী করেছে সৌদি আরব। এ ছাড়া কয়েকজন নারী সাংবাদিক আটক অবস্থায় যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। কমপক্ষে দুজন দÐিত হওয়ার পর মুক্তি পেয়েছেন। তাঁরা হয় গৃহবন্দী হয়ে আছেন অথবা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে তাঁদের ওপর।
সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব সাংবাদিক সবাই স্থানীয় সাংবাদিক। নিজ দেশের ইস্যুগুলোতে তাঁরা লিখতেন। এর মধ্যে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের’ অভিযোগে তুরস্কের আয়সে নাজলি উলুজ্যাক ও হাতিজে দুমান এবং চীনের গুলমায়ের ইমিন যাবজ্জীবন কারাদÐ ভোগ করছেন।
তুরস্ক মোট ৬৮ জন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে দুমান যাবজ্জীবন কারাদÐ ভোগ করছেন। তিনি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে আটকাবস্থায় আছেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দুমান নিষিদ্ধ ঘোষিত মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিলেন এবং ‘সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিলেন’।
২০১৬ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তুরস্ক সরকারের ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানের সময় আটক হন সাংবাদিক নাজলি। তিনি এখন যাবজ্জীবন কারাদÐ ভোগ করছেন। তুরস্ক জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে জঙ্গি সংগঠনগুলোর মুখপাত্রের অভিযোগে শতাধিক নিউজ আউটলেট বন্ধ করে দেয়।
চীনের গুলমায়ের ইমিন রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদÐ পান। তিনি উইঘুর ভাষার ওয়েবসাইটে ভয়াবহ বিক্ষোভের তথ্য সরবরাহ করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অভিযোগ করেন। ওই ওয়েবসাইট পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এর সমস্ত কনটেন্ট মুছে দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *