বটিয়াঘাটা থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রাণে বাঁচলেন গৃহবধূ ও শিশু
বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি
বটিয়াঘাটা থানা পুলিশের তড়িৎ হস্তক্ষেপে স্বামী ও সতীনের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে জীবনে বেঁচে গেলেন প্রথম স্ত্রী ও শিশু পুত্র। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনসহ মোট ৫ জনকে আটক ও খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার দরিচর লক্ষীপুর গ্রামের সৈয়দ হাওলাদারের কন্যা মোসাঃ কল্পনা আক্তার (৩০) এর সহিত মালোয়েশিয়া প্রবাসী ফিরোজ শিকদার (৪০) এর সাথে ১২ বছর পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সে ঘরে এক শিশু সন্তান রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামী প্রথম স্ত্রীকে জানায় দ্বিতীয় স্ত্রী নাইমা আক্তার রনি(২৬) কে সে তালাক দিয়েছি এবং সে অন্যত্র বিয়ে করেছে। তাই সেখানে আমার বাড়ীর কাজ চালু আছে উক্ত কাজ বুঝে নিয়ে তুমি কাজ করাবে। সে মোতাবেক কল্পনা আক্তার পিত্রালয় থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। সেখান থেকে তার স্বামীর বন্ধু পরিচয় দিয়ে ২৭ নভেম্বর দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটের দিকে কাটাখালী থেকে নাঈম শেখ(২৮) ও তানজিলা বেগম(৩০) এর সাথে বটিয়াঘাটা উপজেলার নিজ গ্রামে পৌঁছাই। সেখানে পৌঁছানোর পর প্রথম স্ত্রী বুঝতে পারেন এটা তার স্বতীনের বাড়ি। তখন স্বামীকে ফোনালাপে স্বতীনের বাড়ি তাকে কেন আনা হলো জানতে চাইলে স্বামী তাকে সেখানে থাকার জন্য বলে। আমি সেখানে শুয়ে পড়ি । তারপর রাত ১০টার দিকে নাইমা আক্তার রনি, কামরুন্নাহার বেগম (৪৮), আজিজ শেখ (৫৩), তানজিলা বেগম (৩০) মিলিতভাবে আমাকে গালিগালাজ করে এবং হুমকী দিয়ে বলে তোকে স্বামীর ঘর কারাচ্ছি। এরপর কল্পনা আক্তার কে বেদম মারপিট শুরু করে তার কাছে থাকা স্বর্ণে চেইন, নগদ টাকা, কানের দুল, মোবাইল ফোন তারা কেড়ে নেয়। এরপর তারা কল্পনা আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে মাথা লক্ষ করে কোপ মারে এসময়ে সে মাথা সরালে হাতে লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। এরই মধ্যে তার শিশুপুত্র ইয়াসিন (০৯) ঘুম থেকে উঠে কাঁন্নাকাটি করতে থাকলে আসামীরা ঘরে আটকিয়ে রাখে। এ অবস্থায় সে আরও জোরে চিৎকার করতে থাকলে তাকেও দা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে কোপ মারতে গেলে সে দরজা খুলে রাস্তার যেয়ে চিৎকার করতে থাকলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে এবং পুলিশে খবর দেয়। তাৎক্ষনিক পুলিশের এসআই আহমেদ কবির ও এসআই স্বপন কুমার পাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এতে পুলিশের উপস্থিতির কারণে প্রাণে বেঁচে যাওয়া কল্পনা ও তার শিশুপুত্রকে পুলিশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাজিলা ও নাইম শেখকে আটক করে। এ ঘটনায় কল্পনা বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় ১৫ নং মামলা রুজু করেছে। থানা পুলিশ পুণরায় অভিযান চালিয়ে ২৯ নভেম্বর শুক্রবার সকালে ১০ টার দিকে নাইমা আক্তার, কামরুন্নাহার ও আব্দুল আজিজ শেখকে আটক করেছে। এবং এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পালাতক আসামী ও ছিনিয়ে নেওয়া মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে।