পাপিয়াকাণ্ড: ‘মনগড়া’ তথ্য প্রচার না করার আহ্বান ডিএমপির
তিন মামলায় রিমান্ডে থাকা যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত নিয়ে ‘মনগড়া’ তথ্য প্রচার না করতে সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
মহানগর পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে রিমান্ডে থাকা অভিযুক্তদের সম্পর্কে মনগড়া তথ্য প্রচারের ফলে তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর মনস্তাত্বিক ও সামাজিক চাপ তৈরি হয়। যার ফলে বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।”
এই প্রেক্ষাপটে ‘পেশাদারী ও দায়িত্বশীল আচরণ’ করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে।
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া, তার স্বামী নরসিংদীর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন এবং তাদের দুই সহযোগীকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সে সময় বলা হয়, গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া করে সমাজের উঁচুতলার লোকদের জন্য ‘যৌনসেবার কারবার’ চালিয়ে আসছিলেন পাপিয়া।
পরে জাল মুদ্রা, অস্ত্র ও মদ উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলা হয় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিলেও একদিন বাদে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)।
সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে বিভিন্ন তথ্য আসছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে। ওয়েস্টিনে পাপিয়ার কারবারে জড়িত হিসেবে কয়েকজন সচিব, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য, টকশোর আলোচক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীর নাম এসেছে সোশাল মিডিয়ায়।
এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, “অভিযুক্তদেরকে ডিবি হেফাজতে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের নিকট থেকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিচার্য বিষয়সমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাক্ষীদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
তবে তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে ‘সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য’ দেওয়া হয়নি দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, “উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি কিছু কিছু গণমাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সাথে কোনো রকম আলাপ-আলোচনা না করে তদন্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করা হচ্ছে। তদন্তে প্রাপ্ত কথিত তথ্য হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের নাম ও পরিচয় প্রকাশ ও প্রচার করছে। যার সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা নেই কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের সাথে কোনো সামঞ্জস্য নেই।”
এর আগে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অভিযোগ ও মামলা সংক্রান্ত কিছু ভিডিও এবং কিছু তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।
“আমরা প্রতিটি বিষয়ই আমলে নিয়েছি। প্রতিটি বিষয়ই গুরুত্ব সহকারে আমরা খতিয়ে দেখছি। এর মধ্যে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও রেলিভেন্ট এলিমেন্ট আমরা পিক করছি। সবকিছু সাপেক্ষেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”