ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ায় আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি
ঢাকা: ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো কারণ বা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।
প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ও জনসচেতনতা, দুইটি বিষয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু কিংবা চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলেও মনে করেন মেয়র।
রোববার (০৭ জুলাই) সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মশক নিধন সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এ দাবি ও মতামত দেন। এসময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সচিব হেলাল উদ্দিন, উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএনসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, মশক নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সেমিনার, ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে মসজিদে খুতবা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এছাড়া টিভি, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, ডিজিটাল প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জনমনে সচেতনতা বাড়াতে এরইমধ্যে প্রতিটি এলাকা থেকে মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের সাতজন করে নাগরিক নিয়ে ২৮ জনের কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে কোনো সমস্যা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ছে।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আগামী ১৫ জুলাই (সোমবার) থেকে আমাদের বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় ৪৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাড়া ও মহল্লায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য প্রতিটি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম দেওয়া হবে। যেখান থেকে সহজেই বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ পাওয়া যাবে। এছাড়া কেউ যদি অসুস্থতার জন্য মেডিক্যাল টিমের কাছে যেতে না পারেন সেজন্য হটলাইনও চালু করা হবে। সেখানে ফোন করলেই স্বাস্থ্যকর্মী রোগীর বাসায় গিয়ে চিকিৎসা দেবে। তখন চিকিৎসক যদি মনে করেন রোগীকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না, তখন রোগীকে কাছের কোনো হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এতে যা খরচ হবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তা বহন করবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাগরিক সচেতনতাই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলের বড় শক্তি। জনসচেতনতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। অন্যান্য এলাকার তুলনায় দক্ষিণ সিটি অনেক ঘনবসতি, এখানে নালা কম, কোথাও তেমন পানি জমে থাকে না। ফলে এখানে ডেঙ্গুর প্রকোপও কম। যতটুকু আছে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
দেশে কী পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২১শ’ রোগী ছিল। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন এক হাজার ৮৭৫ জন। তিনশ’ জন এখনও চিকিৎসাধীন। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত দুইজন রোগী মারা গেছেন। তাই আমি দাবি করে বলছি, ঢাকার মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।